রাষ্ট্র ও মানবসম্পদ উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষায় বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। কিন্তু শিক্ষকের অভাবে কুড়িগ্রামের কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সে লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তারা মানসম্পন্ন কারিগরি শিক্ষা পাচ্ছেন না। এছাড়াও আবাসন এবং বিনোদন সুবিধার অভাবসহ নানাবিধ সংকটে ধুঁকছে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের ময়দান আছে, সৈনিক, অস্ত্র ও গোলাবারুদ আছে। কিন্তু কমান্ডারের অভাবে আমরা প্রশিক্ষণ নিতে পারছি না, লড়াই করার উপযুক্ত হয়ে মাঠে যেতে পারছি না। আমাদের কারিগরি শিক্ষা দেয়ার কারিগরই নেই। অনেকটা রূপক ভাষায় কথাগুলো বললেও প্রতিষ্ঠানগুলোর বাস্তব চিত্র এমনই। অবকাঠামো, শিক্ষার্থী ও পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা থাকলেও শুধুমাত্র শিক্ষকের অভাবে মানসম্পন্ন কারিগরি ও প্রকৌশল শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
প্রতিষ্ঠান প্রধানরা বলছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে শিক্ষক চেয়ে বার বার প্রতিবেদন দেয়া হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। ফলে খন্ডকালীন শিক্ষক ও সদ্য পাস করা শিক্ষার্থীদের দিয়ে পাঠ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সাতটি টেকনোলজিতে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী প্রকৌশল বিদ্যায় পড়াশোনা করছে। প্রায় দুই একর জায়গায় প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধা নেই। ফলে শহরের বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থীদের মেসে থেকে পড়াশোনা করতে হয়। এতে করে বাড়তি খরচসহ নিরাপত্তা নিয়েও নানা বিড়ম্বনায় পরতে হয় শিক্ষার্থীদের।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্য মতে, এখানে সাতটি টেকনোলজিতে ১৫২ জন শিক্ষকের পদের বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ১৮ জন। তাদের মধ্যে নন-টেকনিক্যাল শিক্ষকই বেশি। আর আর্কিটেকচার টেকনোলজিতে একজন শিক্ষকও নেই। ফলে দায় সারতে খন্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ড. নুর আলম বলেন, শুরু থেকেই এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকট রয়েছে। বর্তমানে মাত্র ১৮ জন শিক্ষক নিয়ে আমরা চলছি। সপ্তাহে প্রতি ব্যাচের প্রায় ৩৫টি ক্লাস থাকে। খন্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চালাতে হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানেন। তারা শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছেন। হয়তো দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।