কুয়েত সরকার জনসংখ্যার দিক থেকে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে তার দেশে অবাসন আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় অভিযান শুরু করেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় দেশটির বিনেদ আল-গার নামক এলাকায় আবাসন আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এই অভিযানে ২০ নম্বর খাদেম ফ্রি ভিসাধারী বাংলাদেশীসহ বিভিন্ন দেশের কয়েক শত প্রবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে আটকদের মধ্য বাংলাদেশী কতজন আছেন সেই তথ্য জানা যায়নি।
কুয়েতের স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী গ্রেফতার হওয়া এসব ‘অবৈধ’ প্রবাসীকে শেল্টার হোমে রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
কুয়েতের শ্রম আইন অনুযায়ী এক মালিকের ভিসায় কুয়েতে যাওয়ার পর অন্য মালিকের আন্ডারে কাজ করাকে স্থানীয় প্রবাসী দালালরা নাম দিয়েছে ফ্রি ভিসা, যা আবাসন আইনের লঙ্ঘন। এই আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানা শেষে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
কুয়েতের বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা বলছেন, কিছু অসাধু ভিসা ব্যবসায়ী ‘ফ্রি ভিসা’ নাম দিয়ে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া বিদেশগামীদের কাছ থেকে সাত-আট লাখ টাকা আদায় করছে। সাথে দেড় লাখ টাকা থেকে আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে আবার আকামা নবায়ন করতে হচ্ছে। এরপরও কাজ করতে গিয়ে কর্মস্থলে তাদের সবসময় পুলিশ আতঙ্কে থাকতে হয়। মোট কথা গ্রেফতার আতঙ্ক নিয়ে তাদের কাজ করতে হয়।
বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্য জালাল উদ্দিন, কুয়েতের শ্রমবাজারের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। যেটুকু ভালো ছিল সেটিও দুই দেশের দালালরা নষ্ট করে দিচ্ছে। এখানে ফ্রি ভিসা নাম দিয়ে ভিসা কেনাবেচার সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। কারা এই সিন্ডিকেট সেটি দূতাবাসের সবাই কমবেশি জানেন। তারপরও বাংলাদেশ থেকে অনেকে না জেনে না বুঝে লাখ লাখ (সাত-আট লাখ) টাকা দিয়ে এ দেশে আসছেন। আসার পর দেখা যাচ্ছে, যে মালিকের ভিসা নিয়ে তারা এসেছেন সেখানে না থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে কাজ করছেন, যা কুয়েতের শ্রম আইন বিরোধী কাজ। এসব তথ্য কুয়েতের স্থানীয় প্রশাসন জেনেছে। এখন ওই সব ভিসায় আসা বাংলাদেশসহ বিদেশীদের ধরতে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে। জালাল উদ্দিন বলেন, আমার পরামর্শ হচ্ছে যারা কুয়েতে আসার কথা ভাবছেন তাদের অবশ্যই নিয়ম মেনে আসতে হবে। নতুবা লাখ লাখ টাকা খরচ করে এলেও তাদের পুলিশের হাতে ধরা পড়তে হবে এবং জেল-জরিমানা শেষে খালি হাতেই দেশে ফেরত যেতে হবে।
রহমত নামের অপর এক প্রবাসী শ্রমিকবলেন, এত টাকা খরচ করে বৈধ ভিসা নিয়ে আসার পর অবৈধ শ্রমিক হিসেবে কেন কাজ করতে হবে? তিনি যে মালিক বা কোম্পানির ভিসায় কুয়েতে আসছেন সেখানেই কাজ করার অনুরোধ জানান।