কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে নিখোঁজ ছাত্র গুলিবিদ্ধ ঢাকায়

দৈনিক শিক্ষাডটকম, চট্টগ্রাম |

ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আল আমিন। থাকেন চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও এলাকায় মা-বাবার সঙ্গে। গত ৮ জুলাই বাসা থেকে কোচিংয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়ে যান আল আমিন। এরপর আর তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় নগরের চান্দগাঁও থানায় একটি জিডিও করেন আল আমিনের বাবা মাহবুব আলম।

সবশেষ নিখোঁজের ১২ দিন পর গুলিবিদ্ধ আল আমিনের সন্ধান মিলে ঢাকার সাইনবোর্ড এলাকায়। এরপর তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে আসে তার পরিবার। চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেও পুরোপুরি সুস্থ হতে আরো কিছু সময়ের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারবে কিনা সেই শঙ্কা ভর করেছে আল আমিনের পরিবারে। 

জানা গেছে, চান্দগাঁও এলাকার ইডেন স্কুল এণ্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আল আমিন। তিনি গত ৮ জুলাই দুপুরে কোচিংয়ে যাওয়ার কথা বলে বের হন। এরপর আর ফেরেননি। পরে কোচিং, বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয়, স্বজনের বাসায় আল আমিনের খোঁজ না পেয়ে নগরের চান্দগাঁও থানায় জিডি করেন আল আমিনের বাবা।

সবশেষ গত রোববার (২১ জুলাই) সন্ধ্যায় মাহবুব আলমকে ফোন করেন অপরিচিত এক ব্যক্তি। জানানো হয় আল আমিন ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এরপর সোমবার (২২ জুলাই) সাইনবোর্ড এলাকার একটি হাসপাতাল থেকে উদ্ধারের পর আল আমিনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দুই দিন চিকিৎসা শেষে সবশেষ বুধবার দুপুরে আল আমিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছে।

আল আমিনের বাবা মাহবুব আলম বলেন, গত সোমবার সন্ধ্যায় আমাকে একজন লোক ফোন করে বলে যে আল আমিনের গুলি লেগেছে। যাচাই বাছাইয়ের পর সত্যতা পেয়ে আমরা ঢাকায় রওনা হয়। এম্বুলেন্সে আমরা ঢাকা থেকে তাকে নিয়ে এসেছি। কিছুদিন আগে আল আমিনকে পড়ার জন্য বকাবকি করেছি। আমার ধারণা তাই সে ঘর ছেড়ে পালিয়েছে। সঙ্গে তার এক বন্ধুও ছিল। তবে বন্ধুটা সুস্থ আছে। সে আন্দোলনে যোগ দেয়নি। আল আমিন নিখোঁজের পর আমরা থানায় জিডিও করেছি। চিকিৎসকরা বলছেন তার পায়ে ছিটা গুলি লেগেছে, সেগুলো বের করা সম্ভব না। সে এখনো হাঁটতে পারছে না।

শুধু আল আমিন নয়। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের পর চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ২ শতাধিক। এদের মধ্যে এখনো ভর্তি আছেন ১৫ জন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভর্তি আছেন পাঁচ জন। রোগী এবং স্বজনদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে চমেকের পরিবেশ।

সরেজমিনে চমেক হাসপাতাল ঘুরে জানা গেছে, চমেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন গুলিবিদ্ধ পাঁচ জন। এদের মধ্যে তিনজনের চোখে, দুই জনের বুকে গুলি লেগেছে। তাছাড়া চাঁদপুরে সংঘর্ষ চলাকালে আহত একজনকে চমেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করানো হয়েছে। তার শরীরে ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

গুলিবিদ্ধ কিশোর রমজান আলীর মা হিরু আক্তার বলেন, আমার ছেলে ফ্যাক্টরিতে কাজ করে। গত মঙ্গলবার দুপুরে সে ভাত খেতে এসেছিল। দোকানে ফেরার পথে মুরাদপুর এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে তার পেটে গুলি লাগে। পরদিন তাকে হাসপাতালে খুঁজে পাই। আমাদের চিকিৎসা করানোর টাকাও নেই। বিচার কার কাছে চাইবো?

চমেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার মোহাম্মদ জেনারেল তসলিম উদ্দীন বলেন, কোটা আন্দোলনে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে হাসপাতাল থেকে ২০৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এখনো ১৫ জন ভর্তি আছেন। আমাদের স্টোরে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুত আছে। এর বাইরে অন্য কোনো ওষুধ লাগলে সেগুলোও ব্যবস্থা করে দেয়া হচ্ছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর - dainik shiksha শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী - dainik shiksha আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই - dainik shiksha প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে - dainik shiksha জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ - dainik shiksha বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য - dainik shiksha এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা - dainik shiksha অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর - dainik shiksha ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন - dainik shiksha বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী - dainik shiksha একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051770210266113