কোচিংয়ের টাকা না দেয়ায় প্রবেশপত্র আটক

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি |

স্কুলের কোচিংয়ের টাকা পরিশোধ না করায় শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক শীতল চন্দ্র দে’র বিরুদ্ধে। আগামী ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার মাত্র দুইদিন আগে গতকাল সোমবার প্রবেশপত্র হাতে না পেয়ে স্কুলের সামনে হট্টগোল শুরু করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবেকরা। পরবর্তীতে সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে টাকা ছাড়াই শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জেএসসি পরীক্ষার আগের তিন মাস স্কুলে তাদের বাধ্যতামূলক ক্লাস করতে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাধ্যতামূলক এই কোচিং অনেকেই করেনি।

কিন্তু প্রবেশপত্র নিতে গেলে সকলকেই তিন মাসের কোচিং ফি ৫০০ টাকা করে মোট ১৫০০ টাকা প্রদান করতে বলে প্রধান শিক্ষক। এসময় কোচিং না করা ২৫ জন শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড আটকে দেয়া হয়। পরীক্ষার দুইদিন আগে হাতে প্রবেশপত্র না পেয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে শিক্ষার্থী অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘কোচিং শুরু হওয়ার আগে আমার চোখে পিন ঢুকে। আমার চোখের অপারেশন করাতে হয়। স্যারকে এই বিষয়ে জানানো হয়। স্যার আমাকে হাসপাতালে গিয়ে দেখেও এসেছেন। কিন্তু এখন প্রবেশপত্র নিতে আসলে তিন মাসের কোচিং ফি দিয়ে প্রবেশপত্র নিতে বলেন। আমি কোচিং করিনি জানালে, তিনি বলেন কোচিংয়ে পড় বা না পড় ফি দিতে হবে। আজ আবার আসছি এখন বলছে আমার বাবাকে নিয়ে আসতে।’

একই অভিযোগ নিয়ে শিক্ষার্থী আকলিমা আক্তারের মা মাকসুদা বেগম জানান, ডিসেম্বর পর্যন্ত সব বেতন, পরীক্ষার ফিসহ সবধরনের পাওনা পরিশোধ করেছি। আমার স্বামী নাই। পাঁচ সন্তান পড়ালেখা করে। এতো টাকা কিভাবে দিবো। তাই আমার মেয়েকে কোচিংয়ে পড়াইনি। কিন্তু এখন বলছে পড়লেও টাকা দিতে হবে না পড়লেও টাকা দিতে হবে।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক শীতল চন্দ্র দে জানান, স্কুলে যারা দুর্বল শিক্ষার্থী তাদেরকে তিন মাসের কোর্স করার কথা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে। প্রতি বিষয়ে ৩০০ টাকা মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারণ করা। কিন্তু আমরা স্কুলে তিন বিষয় পড়িয়েছি ৫০০ টাকা দিয়ে। কিন্তু যাদের আর্থিক সমস্যা তাদেরকে টাকার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি আনোয়ার হোসেন জানান, আমি এই বিষয়ে কিছু জানতাম না। যদি জানতাম তবে এরকম ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটতো না। এই বিদ্যালয়ে যারা পড়ে তাদের অনেকের আর্থিক সমস্যা রয়েছে। তাই তারা এই বিদ্যালয়ে পড়ে। নয়তো ভালো বিদ্যালয়েই পড়তো। আমরা টাকার জন্য কখনোই শিক্ষার্থীদের চাপ দেই না। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাসুম বিল্লাহ জানান, শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি তিনি দেখবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00229811668396