কোরবানি এক ইবাদত, যা তার নির্ধারিত সময় ছাড়া অন্য সময়ে সিদ্ধ হয় না। এই কোরবানির পশু জবাইয়ের সময় জিলহজ মাসের ১০ তারিখ ঈদের নামাজের পর থেকে ১২ জিলহজ সন্ধ্যা পর্যন্ত। নামাজের আগে কেউ জবাই করলে তার কোরবানি হয় না বরং নামাজের পর ওর পরিবর্তে কোরবানি করা জরুরি হয়।
হজরত জুনদুব আল-বাজালি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে কোরবানিতে উপস্থিত ছিলাম। তিনি যখন নামাজ শেষ করলেন তখন কতক ছাগল ও মেষকে দেখলেন জবাই করা হয়ে গেছে। এরপর (তিনি) বললেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজের আগে জবাই করেছে, সে যেন ওর পরিবর্তে আর এক পশু জবাই করে। আর যে ব্যক্তি জবাই করেনি, সে যেন আল্লাহর নাম নিয়ে জবাই করে।’
ঈদের খুতবায় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আজকের এই দিন আমরা যা দিয়ে শুরু করবো তা হচ্ছে নামাজ। এরপর ফিরে গিয়ে কোরবানি করবো। অতএব যে ব্যক্তি এরূপ করবে সে আমাদের সুন্নাহ (তরিকার) অনুবর্তী। আর যে ব্যক্তি (নামাজের আগে) কোরবানি করে নিয়েছে, তাহলে তা মাংসই; যা সে নিজের পরিবারের জন্য পেশ করবে এবং তা কোরবানির কিছু নয়।’ (বুখারি ও মুসলিম ১৯৬১)
আর উত্তম এটাই যে, নামাজের পর খুতবা শেষ হলে তবে কোরবানির পশু জবাই করা। যে ব্যক্তি ভালরূপে জবাই করতে পারে তার উচিত, নিজের কোরবানি নিজের হাতে জবাই করা এবং অপরকে তার দায়িত্ব না দেওয়া। যেহেতু আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বহস্তে নিজ কোরবানি জবাই করেছেন। এবং যেহেতু কোরবানি নৈকট্যদানকারী এক ইবাদত, তাই এই নৈকট্য লাভের কাজে অপরের সাহায্য না নিয়ে নিজস্ব কর্মবলে তা লাভ করা উত্তম।
ইমাম বুখারি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘আবু মুসা রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর কন্যাদেরকে আদেশ করেছিলেন যে, তারা যেন নিজের কোরবানি নিজের হাতে জবাই করে।’(ফাতহুল বারী ১০/১৯)
পক্ষান্তরে জবাই করার জন্য অপরকে নায়েব করাও বৈধ। যেহেতু এক সময়ে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের হাতে তেষট্টিটি কোরবানি জবাই করেছিলেন এবং বাকী উঁট জবাই করতে হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহুকে প্রতিনিধি করছিলেন ‘ (মুসলিম)