ক্যাম্পাস খুললে শিক্ষকরা কর্মসূচি চালু রাখবেন

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ প্রত্যাহারসহ তিন দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ডাকে টানা ১৫ দিন দেশব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। ফলে ক্যাম্পাসগুলোতে ক্লাস-পরীক্ষার পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যায় দাপ্তরিক কাজও। এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষের জেরে সরকার দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করলে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিও বন্ধ হয়ে যায়। তবে ক্যাম্পাস খুলে দিলে ফের কর্মসূচি পালনের কথা জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।

শিক্ষকরা মূলত তিন দাবিতে আন্দোলন করছেন। সেগুলো হলো প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য সুপার গ্রেড কার্যকর এবং স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন করা।

শিক্ষক নেতারা জানান, অবস্থান কর্মসূচি না থাকলেও তারা নিজেদের দাবিতে অনঢ় রয়েছেন। ক্যাম্পাস খুললেই তারা আবার দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করবেন। ক্যাম্পাস খোলার আগেই শিক্ষকদের দাবি মেনে নিতে সরকারকে অনুরোধও করেছেন তারা।

জানতে চাইলে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, শিক্ষকদের আন্দোলন চলমান, তবে ব্রিফিংগুলো হচ্ছে না। ক্যাম্পাস খোলা হলে

আমাদের কর্মসূচি ফের চালু হবে। এর মধ্যে যদি সরকার দাবি মেনে নেয়, তাহলে আন্দোলন থেকে সরে আসব। নয়তো আন্দোলন চলমান থাকবে।

গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই এটিকে ‘বৈষম্যমূলক’ উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে সরব হন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। কিছু কর্মসূচি পালনের পর ৪ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা। এর পরও দাবির বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ২৫ থেকে ২৭ জুন টানা তিন দিন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা। তাতেও দাবি আদায় না হওয়ায় গত ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ডাকে ১ জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন শুরু হয়।

এরপর থেকে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, বুয়েটসহ দেশের ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে যান। এ আন্দোলনে শরিক হন এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এমন পরিস্থিতিতে গত ১৩ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেখানে তিনি জানান, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই থেকে পেনশনে যোগদানের বিষয়ে যে তথ্য ছিল, সেটা সঠিক নয়। তাদের তিন দাবির মধ্যে এটাও একটা। সবার মতো তারাও ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাইয়ে যোগ দেবেন, এটা নিশ্চিত করা হয়েছে।

পরে ১৪ জুলাই রাতে প্রত্যয় স্কিমের বাস্তবায়ন এক বছর পিছিয়ে দেওয়ার কথা জানায় অর্থ মন্ত্রণালয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রত্যয়’-এর বাস্তবায়ন ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।

তবে এরপর আন্দোলনকারী শিক্ষকরা জানান, সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় সুস্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া হয়নি। প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবি পূরণ না হওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সে হিসেবে এক দিন আন্দোলন কর্মসূচি চালালেও ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাঠের কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যায়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর - dainik shiksha শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী - dainik shiksha আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই - dainik shiksha প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে - dainik shiksha জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ - dainik shiksha বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য - dainik shiksha এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা - dainik shiksha অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর - dainik shiksha ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন - dainik shiksha বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী - dainik shiksha একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024068355560303