ক্লাসরুম কিনতে জাবি শিক্ষার্থীদের প্রতীকী চাঁদা

জাবি প্রতিনিধি |

বরাবরের মতো ক্লাস করতে না পেরে বারান্দায় অধোবদনে দাঁড়িয়ে ছিল শিক্ষার্থীরা। ক্লাস করতে না পারার কারণ, দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাসম্পন্ন একটি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও তাদের নেই নিজস্ব ক্লাসরুম। তাই ক্লাসের সময়ে ক্লাস না করে বারান্দায়, করিডরে বা আঙিনায় দাঁড়িয়ে বসে আড্ডায় সময় কাটে প্রায়ই। বুধবার (১৭ এপ্রিল) পরিস্থিতি একটু ভিন্ন দিকে মোড় নেয় যেন। 

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানায়, এদিন সকাল ১১টায় নির্ধারিত ক্লাসে অংশ নিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের চতুর্থ তলায় অবস্থিত আইন অনুষদের অধিভুক্ত আইন ও বিচার বিভাগের সামনে জড়ো হয় একদল শিক্ষার্থী। তারা তৃতীয় বর্ষের। কিন্তু তাদের জন্য নির্ধারিত শ্রেণিকক্ষ ফাঁকা না থাকায় অনুষদের বারান্দায় দাঁড়িয়েছিল সবাই। বুধবার সেখানে তৃতীয় বর্ষের ক্লাস থাকলেও দেখা যায় স্নাতকোত্তর (৪৩তম ব্যাচ) পর্বের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে। তাই তৃতীয় বর্ষের (৪৬তম ব্যাচ) শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারেনি।

এমন পরিস্থিতি প্রায়ই ঘটে। তবে কিছু সময় পর হঠাৎই তাদের সামনে দিয়ে চলাচলকারীরা কিছুটা চমকের মুখে পড়ে। দেখে, ওই শিক্ষার্থীদের অনেকের হাতেই শোভা পাচ্ছে অদ্ভুত ধরনের আবদার লেখা কিছু প্ল্যাকার্ড, যাতে লেখা-‘টাকা দিন, ক্লাসরুম কিনবো’! তারা ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে প্রতীকী চাঁদাও সংগ্রহ করে ‘ক্লাসরুম কেনার’ লক্ষ্যে।

এমন ব্যঙ্গাত্মক ঘটনা ডিপার্টমেন্ট ছাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে আলোড়ন তোলে। আবার নিতান্ত বাধ্য হয়ে প্রতিবাদী ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের ছলে এমন কাণ্ড করলেও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অনেককেই বিষণ্ন বদনে বিষয়টির অনুভব নিতে দেখা গেছে এ সময়।

২০১১ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরিফ এনামুল কবীরের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয় জাবি আইন ও বিচার বিভাগ। কিন্তু সমসাময়িক সব বিভাগ নিজস্ব শ্রেণিকক্ষসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা পেলেও তার কিছুই পায়নি আইন বিভাগ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কখনও জহির রায়হান মিলনায়তনে কখনও বা সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অথবা ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা হয়ে আসছে তাদের। 

বিভাগের ছয়টি ব্যাচের চার শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য শ্রেণিকক্ষ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের দুটি কক্ষ এবং অর্থনীতি বিভাগের একটি শ্রেণিকক্ষ অস্থায়ীভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে শিক্ষার্থীরা যেমন হয়রানির শিকার হচ্ছে তেমনি সময়মতো অনেক ক্লাসই নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, শ্রেণিকক্ষ না থাকায় ঠিকমতো ক্লাস ও পরীক্ষা হচ্ছে না। ফলে সেশনজটে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ - dainik shiksha সব মাদরাসার ওয়েবসাইট ও তথ্য হালনাগাদের নির্দেশ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক : দুই মন্ত্রণালয় যা করবে নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ - dainik shiksha নার্সিং-মিডওয়াইফারি ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির উদ্যোগ স্থগিতের নেপথ্যে শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ - dainik shiksha শিক্ষাখাতে অপপ্রচারে ভূয়া অভিভাবক ফোরাম, জাল সনদের অধ্যক্ষ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029640197753906