করোনা মহামারির থাবায় দেড় বছরের বেশি সময় পর শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরতে শুরু করেছেন। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজগুলোতে ক্লাস শুরু হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস এখনো শুরু হয়নি। শিক্ষার্থীরা বলছেন, মেডিকেল বা চিকিৎসা শাস্ত্রের পড়াশোনা অনেকটাই ব্যবহারিক জ্ঞাননির্ভর হওয়ায় অনলাইন ক্লাসে তারা অনেক কিছুই বুঝতে পারছেন না। আর করোনার প্রকোপ অনেকটাই কমে গেছে। তাই দ্রুত সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস শুরু করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এদিকে এই দুই বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরানোর চিন্তাভাবনা শুরু করেছে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর। গতকাল সোমবার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এনায়েত হোসেন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, মেডিকেলের তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরানোর বিষয়ে জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির কাছে ইতোমধ্যে এ বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। কমিটির মত পেলে দ্রুত এই দুই বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরানো হবে।
রাজধানীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, ‘গত ১৩ সেপ্টেম্বর সরকারি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে প্রথম, দ্বিতীয় ও পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের হয়নি। অনলাইনে ক্লাস চলছে। কিন্তু মেডিকেলের পড়াশোনা অনেকটা ব্যবহারিক নির্ভর হওয়ায় আমরা অনেক কিছুই বুঝতে পারছি না।’
তিনি আরও জানান, ‘সবার আগে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা সবাই টিকার আওতায় এসেছে। কিন্তু আমাদের ক্লাস এখনো শুরু হয়নি। আমার দ্রুত ক্লাসে ফিরতে চাই।’
এদিকে একজন মেডিকেল শিক্ষার্থীর অভিভাবক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ‘ইতোমধ্যে করোনা সংক্রমণ কমেছে। প্রথম, দ্বিতীয় ও পঞ্চম বর্ষের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু না হওয়ায় আমার উদ্বিগ্ন। মেডিকেলের পড়াশোনা ব্যবহারিক। তাই, আমরা চাই শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরুক। শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হয়ে গেছে।’
এদিকে দেশে করোনা সংক্রমণের প্রকোপ অনেকাংশেই কমেছে। গতকাল সারাদেশে করোনা-আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন আরও ২৮৯ জন। এই সময়ের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে কবে থেকে মেডিকেলের তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস শুরু হবে, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এনায়েত হোসেন জানান, ‘মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা টিকার আওতায় এসেছে। মেডিকেলের প্রথম, দ্বিতীয় ও পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলছে। আমরা তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের দ্রুত ক্লাসে ফেরাতে চাই। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরানোর মতামত চেয়ে আমরা জাতীয় পরামর্শক কমিটিকে লিখেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের বিষয়টি আমরা বুঝতে পারছি। মেডিকেলের পড়াশোনা প্র্যাকটিকাল। তাদের ক্লাসে ফেরানো জরুরি। তবে, জাতীয় পরমর্শক কমিটির সুপারিশ অনুসারে সব কিছু শুরু করা হচ্ছে। তাই সে অনুসারে আমরা জাতীয় পরামর্শক কমিটির মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছি। তাদের মতামত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে।’