বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে শিক্ষককে আড্ডা বাদ ক্লাস নিতে বলায় বরিশাল জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও কাগাশুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলামকে মারধর করেছেন সহকারী শিক্ষকরা। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কাগাশুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে আহত প্রধান শিক্ষক বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে প্রধান শিক্ষককে মারধরের কথা অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষকরা।
মঙ্গলবার দুপুরে দাপ্তরিক কাজ শেষে বিদ্যালয়ে ফেরেন প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি বিদ্যালয়ের ক্লাসে কোনো শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখতে পেয়ে বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক শহিদুল ইসলাম সাইফুল্লাহকে ক্লাসে যেতে বলেন। তখন তিনি ক্লাসে যাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। তখন প্রধান শিক্ষক তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।
এরপর তার সাথে থাকা শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মোখলেসুর রহমান এবং ক্লাসে থাকা কৃষিশিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক যুক্ত হন। এসময় শহিদুল ইসলাম সাইফুল্লাহ প্রধান শিক্ষকের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে আঁছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলেন। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হলে প্রধান শিক্ষককে টেনেহিঁচড়ে লাইব্রেরির মধ্যে নিয়ে তারা দু’জন মিলে মারধর করেন। খবর পেয়ে আহত প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলামকে উদ্ধার করে স্থানীয় কাউনিয়া থানা পুলিশ।
এ নিয়ে কাগাশুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম সাইফুল্লাহ ও আরেক সহকারী শিক্ষক মোখলেসুর রহমান প্রায়ই রুটিনে থাকা ক্লাসে যান না। মূলত তাদের ক্লাস নিতে বলায় তারা আমার উপর হামলা করে আমাকে আহত করেছে। আমি জেলা প্রশাসনে জানিয়েছি। এ নিয়ে আমি পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
তবে প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সহকারী শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক নিজেই তার জামা ছিঁড়ে ফেলেন এবং চিৎকার করেন। তাকে কোনো ধরনের মারধর করা হয়নি। আমরা সহকারী শিক্ষকরা তাকে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে নিতে চাইলে তিনি আসতে চাননি এবং নিজে নিজেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
বিদ্যালয়ের আরেক সহকারী শিক্ষক ও মারধরের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ধর্মীয় শিক্ষক শহিদুল ইসলাম সাইফুল্লাহ জানান, আমি নতুন কারিকুলামে যে বিষয়ে প্রশিক্ষণ পেয়েছি, তার বাইরে ক্লাস নিতে পারি না।
এটি প্রধান শিক্ষককে জানানোর পর তিনি চিৎকার করতে থাকেন। এরপর আমি ও সহকারি শিক্ষকরা তাকে অফিস রুমে আনতে গেলে তিনি না এসে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে কোনো ধরনের মারধর করা হয়নি।