পঞ্চগড়ে সৃজনশীল প্রশ্নপত্র প্রণয়ন প্রশিক্ষণ কর্মশালার খাবার কেনার দায়িত্ব না দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার গাড়ির চালক ইমতিয়াজ আলী বাবলা জেলা প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক আমিনুল ইসলামকে পিটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সামনেই ওই কর্মকর্তাকে মারধর করা হয় জানায় সংশ্লিষ্টরা।
ভুক্তভোগী কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, 'শনিবার সকালে জেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের নিয়ে ৬ দিনব্যাপি সৃজনশীল প্রশ্নপত্র প্রণয়ন প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে জেলা শিক্ষা অফিস। পঞ্চগড় বিপি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় জেলার পাঁচ উপজেলা থেকে ২০০ জন শিক্ষক অংশ নেয়। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় দায়িত্বে ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসের সেসিপ প্রকল্পের জেলা প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক আমিনুল ইসলাম। দুপুরের খাবার কেনার দায়িত্ব না দেয়ায় ইমতিয়াজ আলী বাবলা জেলা প্রশিক্ষণ সমন্বয়ককে গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে লাঠি দিয়ে ওই কর্মকর্তাকে মারধর করে। পরে, পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ এসে ওই কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে এবং বাবলাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।'
জেলা প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক আমিনুল ইসলাম বলেন, 'প্রতি বছর জেলা শিক্ষা অফিসের বিভিন্ন কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার করে আসছিলো ড্রাইভার বাবলা। খাবার পরিবেশনসহ বিভিন্নভাবে সে অর্থ আত্মসাৎ করতো। এবার খাবারের দায়িত্ব বাবলাকে দেইনি বলে সে ক্ষুব্ধ। তাই বাবলা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সামনেই আমার উপর হামলা করেছে। আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।'
এর আগেও, গাড়ি চালক ইমতিয়াজ আলী বাবলার বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়েও শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের উপর প্রভাব খাটানো ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ করা হয়।
আটোয়ারী উপজেলার সহকারি শিক্ষক শাহ আলম বলেন, 'একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়েও কোটিপতি হয়ে গেছে। রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে তার বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাটসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে তার। এসব কিভাবে অর্জন করেছে তা খতিয়ে দেখা উচিত।'
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের উপপরিচালক মো. আকতারুজ্জামান বলেন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। আমি লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করতে বলেছি। তা পেলেই ওই ড্রাইভারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে, থানা হাজতে থাকা গাড়ি চালক ইমতিয়াজ আলী বাবলা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, 'আমি ওই কর্মকর্তাকে মারধর করিনি। বরং তিনিই আমাকে মারধর করেন।'