খারাপ থেকে সবচেয়ে ভালো কুমিল্লা বোর্ড, কীভাবে?

নিজস্ব প্রতিবেদক |

এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার সবচেয়ে বেশি কুমিল্লায়। যাঁরা এবার এইচএসসি পাস করেছেন, তাঁরা ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসি পরীক্ষা দেন। অথচ ওই বছর পাসের হারে কুমিল্লা বোর্ডের অবস্থান ছিল তালিকায় একেবারে নিচের দিকে! অথচ সেই কুমিল্লা বোর্ডই এবার দেশসেরা!

বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল ১০টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল তুলে দেওয়া হয়। তারপরই প্রধানমন্ত্রী কম্পিউটারের বাটন চেপে ফল প্রকাশ করেন। আটটি শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭১ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

দেশের ১০টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সবচেয়ে খারাপ ফল করেছিল কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। ওই সময় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পাসের হার ছিল ৪৯ দশমিক ৫২। এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৪ ভাগ।

২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল আজ বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি আজ দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে ফল তুলে ধরেন সাংবাদিকদের সামনে। এ সময় ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসিতে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ফল বিপর্যয় এবং চলতি বছর এইচএসসিতে বোর্ডটির শীর্ষস্থানে উঠে আসার বিষয়টি উঠে আসে।

একজন সাংবাদিক শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জানতে চান, যে বোর্ডের শিক্ষার্থীরা ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে সবচেয়ে বেশি খারাপ ফল করেছে, সেই ব্যাচটিই এবার সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে দেশের শীর্ষস্থানে চলে এলো। এর পেছনে কী কারণ রয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড হয়তো ভালো করার জন্য চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করেছে। এর সুফলও তারা পেয়েছে। তবে এ বিষয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ভালো বলতে পারবেন।’

কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ভালো ফলের বিষয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আবদুস ছালাম বলেন, ‘২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসির ফল আমরা বিশ্লেষণ করে দেখেছি, আইসিটি ও ইংরেজি বিষয়ে ওই সময় আমরা খারাপ করার কারণে পিছিয়ে গিয়েছি। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক কর্মপন্থা ঠিক করেছি। অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা নজর দিয়েছি। এসব কারণেই আমরা ওই শিক্ষার্থীদের নিয়েই এবার দেশের সেরা অবস্থানে উঠে আসতে সক্ষম হয়েছি।’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘এবার আমাদের পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬২৯ জন। এর মধ্যে পাস করেছে নয় লাখ ৮৮ হাজার ১৭২ জন। ফেল করেছে তিন লাখ ৪৮ হাজার ৪৫৭ জন।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আট শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে পাসের গড় হার ৭৯ দশমিক ৯৩ ভাগ। জিপিএ ৫ পেয়েছে ৪৭ হাজার ২৮৬ জন। সাধারণ বোর্ডে পাসের হার ৭১ দশমিক ৮৫ ভাগ, কারিগরি বোর্ডে ৮২ দশমিক ৬২ ভাগ এবং মাদ্রাসা বোর্ডে ৮৮ দশমিক ৫৬ ভাগ।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুমিল্লার বেশ কয়েকটি কলেজের শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাকে বলেছেন, বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ শাখার একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা  শিক্ষা ক্যাডারের বিতর্কিত বাড়ৈ সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে পরিচিত। আর বর্তমান চেয়ারম্যান এই বোর্ডে রয়েছেন বছরের পর বছর ধরে। বোর্ডের ফল ভালো দেখিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থেকে চেয়ারম্যান পদে আবার ঢাকার বাইরের বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ থেকে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অথবা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদে আসার জন্য শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা রয়েছে বহু বছর ধরে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040929317474365