খুবিতে নবীন শিক্ষার্থীকে ৫ ঘণ্টা ধরে নির্যাতন

খুবি প্রতিনিধি |

ফুলহাতা জামার হাতা গুটিয়ে ক্যাম্পাসে ঘোরাঘুরি করছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) প্রথম বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের নবীন শিক্ষার্থী মো. আমানউল্লাহ। সেই ‘অপরাধে’ শুক্রবার রাতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন তাঁর বিভাগের বড় ভাইয়েরা। এমনকি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মতো নির্যাতন করে তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি।

শনিবার খুবির ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের কাছে আমানউল্লাহ লিখিত অভিযোগ করেছেন আমানউল্লাহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) প্রথম বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী (২৩ ব্যাচ) তিনি।

নির্যাতনের অভিযোগ ওঠা শিক্ষার্থীরা একই ডিসিপ্লিনের প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। শুক্রবার রাতে পাঁচ থেকে ছয়জন মিলে তাঁকে নির্যাতন করলেও তিনি ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের কাছে দেওয়া অভিযোগে তিনজনের নাম উল্লেখ করেছেন।

গত ১৬ আগস্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হলেও আমানউল্লাহ চার দিন আগে থেকে ক্লাস শুরু করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে একটি ভাড়া বাসায় কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে থাকেন তিনি।

আমানউল্লাহ বলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী নির্যাতনের কিছু অলিখিত নিয়ম আছে। এর মধ্যে একটি ফুলহাতা জামার হাতা গুটিয়ে বড় ভাইদের সামনে চলা যাবে না। তিনি নিয়মের কথা জানতেন। কিন্তু অভ্যাসবশত শুক্রবার বিকেলে জামার হাতা গুটিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরতে গিয়েছিলেন। রাত ৯টার দিকে তাঁর রুমমেট ফোনে কল করে আধা ঘণ্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে শাহ শিরিন সড়কের একটি চায়ের দোকানে একা যেতে বলেন এক বড় ভাই।

“সেখানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা তাঁকে চড়থাপ্পড় মারতে শুরু করেন। একপর্যায়ে ক্যাম্পাসে জামার হাতা গুটিয়ে ঘোরাফেরার কারণ জানতে চান। ভুল হয়ে গেছে বলে ক্ষমা চাওয়ার পরও প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেন তাঁরা। রাত আড়াইটার দিকে তাঁর কয়েকজন বন্ধু এসে ক্ষমা চেয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে নেন।”

আমানউল্লাহ আরও বলেন, রাত আড়াইটার দিকে আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর বিপর্যস্ত অবস্থায় প্রথমে বাড়িতে বাবার কাছে ফোন দিই। কিন্তু অত রাতে বাবা ফোন ধরেননি। আরও কয়েকজন বন্ধুর কাছে ফোন করি। কিন্তু সাড়া পাইনি। পরে ৯৯৯-তে ফোন করে ব্যাপারটি পুলিশকে জানাই। সেখান থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিই। পরে মহানগরের হরিণটানা থানার পুলিশ এসে আমাকে সেখান থেকে নিয়ে যায়। বাকি রাতটুকু থানাতেই ছিলাম। সকালে পুলিশ ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের কাছে তুলে দিয়ে আসে। এরপর ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক মো. শরীফ হাসান বলেন, বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে কমিটিতে কারা আছেন, সেটি তিনি প্রাথমিকভাবে জানাননি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এইচএসসিতে বরিশাল বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২৯ - dainik shiksha এইচএসসিতে বরিশাল বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২৯ পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা - dainik shiksha পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা শিক্ষায় কী হলো তিন মাসে - dainik shiksha শিক্ষায় কী হলো তিন মাসে মাদরাসায় চলে যায় প্রাথমিকের ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী - dainik shiksha মাদরাসায় চলে যায় প্রাথমিকের ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক অবশেষে কপাল খুললো পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে বাদপড়াদের - dainik shiksha অবশেষে কপাল খুললো পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে বাদপড়াদের শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ১৫তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ১৫তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! - dainik shiksha দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! - dainik shiksha ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039350986480713