গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে না

নিজামুল হক |

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ বা সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি  গ্রহণের জোর উদ্যোগ আবার থেমে গেছে। ফলে ১৯ জুলাই এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সারাদেশ ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এবারো দুর্ভোগ পোহাতে হবে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের। হাতে যথেষ্ট সময় না থাকার কারণ দেখিয়ে ইতোমধ্যে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সভা করে এবার ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ পদ্ধতিতে না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গুচ্ছ বা সমন্বিত পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার কেন্দ্রীয়ভাবে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নানকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয় চলতি বছরের শুরুতেই। কিন্তু এবার সমন্বিত পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার জন্য এখন পর্যন্ত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সম্মত হয়নি।

ইউজিসি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, পরীক্ষা নেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ফলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত তারাই নেবে। তবে এবার থেকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে অনিশ্চয়তার শঙ্কার কথাও বলেন তিনি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমন্বিত বা গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি নিয়ে দীর্ঘদিন আলোচনা হলেও এর কোনো সমাধান নেই। বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনাগ্রহেই আটকে আছে এ পদ্ধতি।

উপাচার্যরা বলছেন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয় রয়েছে, সেগুলোকে সমন্বয় করা, প্রশ্নপত্র প্রণয়নে জটিলতা ও গোপনীয়তা, মাইগ্রেশন পদ্ধতি কিভাবে থাকবে সেগুলো বিবেচনায় আনার জন্য প্রথমত একটি স্বচ্ছ নীতিমালা প্রয়োজন। সেটা এখনও হয়নি। তাই এই শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি করা সম্ভব নয়।

কমিটির সদস্য সচিব ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, কমিটি একাধিক বৈঠক করেছে। তবে এ পর্যন্ত যা বোঝা যাচ্ছে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব নয়। সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পুরনো নিয়মেই ভর্তি পরীক্ষা হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে বর্তমানে ৪০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদাভাবে ফরম কিনতে হবে। আর দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে ঘুরে পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।

২০০৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়ার সংস্কার করতে তখনকার শিক্ষা উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের নিয়ে বৈঠক করেন। তাতে গুচ্ছ ভিত্তিক ভর্তির প্রস্তাব দেয়া হয়। এতে অধিকাংশ ভিসিই একমত পোষণ করলেও বেশ কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন খর্ব হওয়ার আশঙ্কা করেন। ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ভিসিদের নিয়ে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বুয়েট) কয়েকটি বড় বিশ্ববিদ্যালয় অসম্মতি জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালের ৭ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে উপাচার্যদের সভায় বেশিরভাগ উপাচার্য সমন্বিত বা গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত পোষণ করেছিলেন। কিন্তু পরেও তা বাস্তবায়ন করেননি।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্র্রবি) এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অভিন্ন পরীক্ষা নেয়ার ঘোষণাও দেয়। তবে পরে শাবিপ্রবিতে আন্দোলনের কারণে এ উদ্যোগও ভন্ডুল হয়ে যায়।

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা হলো একই পদ্ধতির পরীক্ষায় মূলত একই প্রশ্নপত্রে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ। একই স্থানে বসে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ শিক্ষার্থীর জন্য কম হয়রানিমূলক একটি ব্যবস্থা।

 

 

সৌজন্যে: ইত্তেফাক


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027980804443359