গুজব ছড়ানোর অভিযোগে ৩ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক |

নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন মো. আক্তারুজ্জামান টনি (২২), আসাদুল্লাহ আল গালিব (২২) ও মুনইন সরকার (২৩)। তাঁদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, মোবাইলের তিনটি সিম, ভিডিও ক্লিপ, ইসলামি বই, শিবিরে যোগদানপত্র উদ্ধার করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-২। র‍্যাবের দাবি, এই তিন শিক্ষার্থী ছাত্রশিবিরের সদস্য।

তবে গ্রেপ্তার তিন শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা জানান, গত সোমবার রাতে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। 

র‍্যাব-২-এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২-এর একটি দল গতকাল সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে ধানমন্ডির আবাহনী মাঠে প্রধান গেটের সামনে থেকে টনি, গালিব ও মুনইনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা নিজেদের ছাত্রশিবিরের সদস্য বলে র‍্যাবকে জানিয়েছেন। ব্যক্তিগত মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফেসবুকের আইডি থেকে ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত ও দীর্ঘায়িত করে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন রকম স্ট্যাটাস দিয়ে আসছেন তাঁরা। তাঁরা আরও স্বীকার করেন, গত ২৯ জুলাই শহীদ রমিজউদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর উদ্দেশ্যমূলকভাবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা ও বানোয়াট ছবি, গুজব সংবাদ, বানোয়াট ভিডিও ভাইরাল, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য বিভ্রান্তমূলক স্ট্যাটাস প্রকাশ করে আসছেন। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিলেও এই তিনজন তাঁদের সহযোগীদের সঙ্গে বিক্ষোভ কর্মসূচি পরিচালনা এবং রাস্তায় সাধারণ মানুষের ওপর হামলা করার জন্য অপতৎপরতা চালিয়ে আসছেন। 

র‍্যাবের তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তার তিন শিক্ষার্থীর মধ্যে টনির বাবার নাম মো. আলাউদ্দিন। তাঁর গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল থানার পূর্ব ভান্ডারা গ্রামে। টনি বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম হলের ৩০৫ নম্বর কক্ষে থাকেন। আরেক শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ আল গালিব একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওসমানী হলের ১০০৩ নম্বর কক্ষে থাকেন। তাঁর বাবার নাম কুদরত-ই-খুদা। নাটোর সদর থানার গুনারী গ্রামের গালিবের বাড়ি। মুনইন সরকারের বাবার নাম ইসাহাক সরকার, তাঁর গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর সদর থানার ফকিরপাড়া গ্রামে। মুনইন সরকার টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম হলের ১০৪ নম্বর কক্ষে থাকেন।

যোগাযোগ করা হলে টনির বাবা মো. আলাউদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন। গত সোমবার রাতে টনির এক সহপাঠীর মাধ্যমে তাঁর ছেলের নিখোঁজ হওয়ার কথা জানতে পারেন।

মুনইন সরকারের পরিবারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য দাবি করেন, মুনইন ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। তাঁকে গত সোমবার হল থেকে র‍্যাব ধরে নিয়ে যায়। 
গালিবের বাবা কুদরত-ই-খুদা মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নয়। ছাত্র আন্দোলনেও তাঁর কোনো ভূমিকা ছিল না। গত সোমবার গালিবকে হল থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033740997314453