রাজধানীর গুলশানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এক প্রতারককে ছাড়িয়ে নিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার ছোড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে দুজন আহত হয়েছেন। রোববার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে গুলশান-১ নম্বরে ডিএনসি মার্কেট এলাকায় গ্লোরিয়া জিন্স কফিস-এর সামনে এ গুলির ঘটনা ঘটে। পুলিশ গুলি নিক্ষেপকারী আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টুসহ তার দুই সহযোগীকে আটক করেছে। মিন্টু ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি। তার অস্ত্রটি জব্দ করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ আমিনুল ইসলাম ও আব্দুর রহিম মিয়াকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রহিম রিকশা-ভ্যানচালক এবং আমিনুল প্রাইভেটকার চালক।
পুলিশ জানিয়েছে, রহিম ওই পথে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমিনুল গ্লোরিয়া জিন্স কফিস-এর সামনে তার গাড়ি রেখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গ্লোরিয়া জিন্স কফিস-এর পাশে আলফা স্টোর নামে একটি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের দোকানে আরিফ হোসেন নামে এক ব্যক্তি কয়েক দফায় ৭৫ হাজার টাকা বিকাশ করেন। এরপর দোকানিকে টাকা না দিয়ে তিনি ছলচাতুরী শুরু করেন। তখন দোকান মালিক আলীম হোসেনসহ স্থানীয় লোকজন আরিফকে আটক করেন। টাকা দেওয়ার জন্য ওই ব্যক্তি তার সহযোগী আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু, মনির আহাম্মেদসহ কয়েকজনকে ডেকে আনেন। তখন তারা প্রতারক আরিফকে ছিনিয়ে নিতে চাইলে স্থানীয়দের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু করেন। এক পর্যায়ে আব্দুল ওয়াহিদ মিন্টু তার কাছে থাকা পিস্তল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। এতে গ্লোরিয়া জিন্স কফিসে খেতে আসা মো. মহিউদ্দিনের প্রাইভেটকার চালক আমিনুল ইসলামের বাঁ পায়ে এবং রিকশা-ভ্যানচালক আব্দুর রহিম মিয়া পায়ে গুলিবিদ্ধ হন।
ডিএনসি মার্কেটের নিরাপত্তাকর্মী শাহীন আলম জানান, বিকাশে ৭৫ হাজার টাকা পাঠানোর পর আরিফ নামে ওই ব্যক্তি টালবাহানা শুরু করেন। ভুল নম্বরে টাকা গেছে বলে দাবি করেন। এরপর তারা ওই ব্যক্তিকে আটকালে নিজের লোকদের ফোন করে টাকা নিয়ে আসছে বলে জানান। কিছুক্ষণ পর কয়েকজন ঘটনাস্থলে এসে উল্টাপাল্টা শুরু করেন। এক পর্যায়ে আরিফের এক সহযোগী এলোপাতাড়ি ফাঁকা গুলি ছুড়তে থাকলে দুজন গুলিবিদ্ধ হন।
পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. আ. আহাদ বলেন, গুলি নিক্ষেপকারী মিন্টুসহ তার আরও দুই সহযোগীকে আটক করা হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রটির বৈধ লাইসেন্স রয়েছে বলে জানা গেছে। কোন পরিস্তিতিতে তিনি গুলি ছুড়েছিলেন, সে তদন্ত চলছে। ওই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
পুলিশের গুলশান বিভাগের অপর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মিন্টুর কাছ থেকে একটি পিস্তল, ১৬ রাউন্ড গুলি, গুলির তিনটি খোসা ও ৪টি ম্যাগাজিন জব্দ করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইসহাক মিয়া বলেন, গুলশানের ঘটনা তিনি শুনেছেন। বিষয়টি যদি মিন্টুর ব্যক্তিগত হয় তাহলে সে দায় সংগঠন নেবে না। তদন্ত করে সংগঠন তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।