গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ভিসি সমর্থকদের হামলার ঘটনায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ৬ ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জনকে স্থায়ী ও একজনকে দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়। গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক নুরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ আদেশ দেয়া হয়।
স্থায়ী বহিষ্কৃতরা হলেন রাফিজুল ইসলাম, নুরুদ্দিন নাহিদ, আরিফুল ইসলাম সাকিব, মাজহারুল ইসলাম মিশন ও রাহাত আল হাসান। দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে ইসমাইল শেখকে।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের তৃতীয় দিনে ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা সেই আদেশ অমান্য করে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। ওইদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসার পথে ভিসি সমর্থক শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের হামলার শিকার হন। এতে ২০ শিক্ষার্থী আহত হন।
ওই ঘটনায় সাবেক ভিসির নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করলেও কমিটি হামলার ঘটনায় কারও সম্পৃক্ততা পায়নি। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ অক্টোবর সিএসই বিভাগের সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক সালেহ আহমেদ, প্রক্টর রাজিউর রহমান, বাংলা বিভাগের সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রহমান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক মাহবুবা উদ্দিন ও অধ্যাপক নুরউদ্দিন আহমেদকে সদস্য করে ৫ সদস্যের পুনঃতদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক নুরউদ্দিন আহমেদ জানান, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর গত ১৩ ও ১৪ নভেম্বর শৃঙ্খলা বোর্ড সভা করে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ৬ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত ৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কার : ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সাত শিক্ষার্থীকে দুই সেমিস্টার এবং হল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন- অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (এআইএস) বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির বাবুল শিকদার বাবু; ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের নয়ন খান, নিয়ামুল ইসলাম ও মনিমুল হক; আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র অমিত গাইন, দ্বিতীয় বর্ষের মানিক মজুমদার ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রনি খান।
গত ৯ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আগে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অভিযানে প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনায় শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীসহ ১২ জনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে সাতজন বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।