ঘুম থেকে তুলে শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র নামিয়ে দিলো ছাত্রলীগ

দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাবি |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্‌শ হলে মধ্যরাতে এক শিক্ষার্থীকে ঘুম থেকে তুলে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা আসন থেকে বিছানাপত্র নামিয়ে দিয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

ঘটনার পর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি জানাজানি হলে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মধ্যস্থতায় ওই শিক্ষার্থীকে আবার আসনে তুলে দেয়া হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম লাদেন রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি নিজের বিভাগের এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে গত বছরের মার্চ থেকে ওই আসনে থাকছিলেন। সম্প্রতি আবাসিকতার আবেদন করে ব্যাংকে টাকাও জমা দিয়েছেন। বিভাগের বড় ভাইয়ের নামে বরাদ্দ ওই আসনে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার কথা।

মাদার বখ্‌শ হলের ৪২০ নম্বর কক্ষে থাকতেন লাদেন। রাত একটার দিকে তাঁকে ঘুম থেকে তুলে আসন থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন মাদার বখ্‌শ হলে ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মেসকাত হাসান ও তাঁর অন্তত ১০ অনুসারী। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামের ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেন ভুক্তভোগী।

ফেসবুক পোস্টে ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন, তিনি মাদার বখ্শ হলের অনাবাসিক ছাত্র। ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ৪২০ নম্বর কক্ষে বিভাগের বড় ভাইয়ের বরাদ্দ করা আসনে থাকছিলেন। সম্প্রতি ওই কক্ষে আবাসিকতার জন্য তিনি আবেদন করেছেন। হল কর্তৃপক্ষও সপ্তাহখানেক আগে আবাসিকতা পাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে। তিনি আবাসিকতা ফি ও ভাড়ার টাকা ব্যাংকে জমাও দিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ জানায়, যাঁর নামে বরাদ্দ করা আসন, তিনি (বড় ভাই) বাতিল করলে আসনটি তাঁর নামে বরাদ্দ করা হবে। আগামীকাল তাঁর (বড় ভাই) আসন বাতিল করার কথা। এর মধ্যে রাত ১২টার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জোর করে তাঁকে আসন থেকে নামিয়ে অন্য আরেকজনকে উঠিয়ে দিয়েছেন।

লাদেন রহমানের রুমমেট কামরান শেখ বলেন, ‘গতকাল রাতে আমরা দুজনই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। রাত সাড়ে ১২টার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে লাদেনের বিছানাপত্র নামিয়ে দিয়ে অন্য একজনকে তুলে দিয়ে যান।’

অভিযোগের বিষয়ে মাদার বখ্শ হলে ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মেসকাত হাসানের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে তিনি হল প্রশাসনের মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করে দিয়েছেন। ওই শিক্ষার্থী তাঁর আসনেই আছেন। এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে ব্যাপারে তাঁরা সতর্ক থাকবেন।

মাদার বখ্শ হলের প্রাধ্যক্ষ মো. রোকনুজ্জামানও বিষয়টি সমাধান করার কথা জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগী লাদেন রহমান আজ বৃহস্পতিবার বলেন, গতকাল রাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে জোর করে তাঁকে আসন থেকে নামিয়ে দেন। এ বিষয়ে আজ সকালে ফেসবুকে পোস্ট করলে হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বিষয়টির সমাধান করে দেন। আজ দুপুর ১২টার দিকে তিনি তাঁর আসন ফিরে পেয়েছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জোর করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা হুঁশিয়ারি - dainik shiksha জোর করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা হুঁশিয়ারি রাজনীতি করি না, ভবিষ্যতেও করবো না: ঢাবির নতুন ভিসি - dainik shiksha রাজনীতি করি না, ভবিষ্যতেও করবো না: ঢাবির নতুন ভিসি চার তারিখের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন - dainik shiksha চার তারিখের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষকদের এমপিওর আবেদন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আমানুল্লাহ - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আমানুল্লাহ দীপু-টিপু-রতন সিন্ডিকেটের ঘুষের সাম্রাজ্য - dainik shiksha দীপু-টিপু-রতন সিন্ডিকেটের ঘুষের সাম্রাজ্য এনসিটিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি বৈষম্যবিরোধীদের - dainik shiksha এনসিটিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের শাস্তি দাবি বৈষম্যবিরোধীদের কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033631324768066