ঘুষের টাকা মসজিদে দান করেন কিছুটা নিজেরাও নেন

দৈনিক শিক্ষাডটকম, লক্ষ্মীপুর |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, লক্ষ্মীপুর: দলিল রেজিস্ট্রিসহ বিভিন্ন সেবা দিতে সরকারি ফির বাইরেও নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। ভুল সংশোধনে টাকা, টিপ সই দিতে লাগে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা। এমন সব অভিযোগ উঠেছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। অতিরিক্ত টাকার চাপে অতিষ্ঠ জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা। জমি বেচাকেনার নামেও হচ্ছে কোটি টাকার বাণিজ্য।

ভুক্তভোগীরা জানান, দলিল রেজিস্ট্রিসহ বিভিন্ন সেবা দিতে গ্রাহকদের কাছ থেকে সরকারি ফির বাইরে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন দলিল লেখকদের পাশাপাশি সাব-রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ আরমানও। দলির লেখকদের সঙ্গে দেনদরবার করে টাকা দেন জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা। প্রতি দলিলে লাখে সাড়ে ৭ শতাংশ হারে ব্যাংক পে-অর্ডার দিতে হয়। 

ব্যাংকে প্রতি পে-অর্ডার কমিশন ৩৪০ টাকাসহ আরও ১০০ টাকা এবং সমিতিসহ প্রতি দলিলে ১৪১০ টাকা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে জমা দিতে হয়। প্রতি লাখে সাড়ে ৯ হাজার টাকা ব্যাংক-অফিসে ভাগ হলেও অতিরিক্ত টাকার কোনো হিসাব কাগজে-কলমে নেই। অতিরিক্ত টাকার চাপে অতিষ্ঠ জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রকাশ্যে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে বসে দলিল গ্রাহকদের কাছ থেকে টিপ সই বাবদ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, মাঝে মাঝে ৫০০ টাকাও নেওয়া হচ্ছে। কেউ টাকা না দিলে জোর করে নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে এবং পাশে দলিল লেখকদের সঙ্গে জমি বিক্রির মালিক-গ্রাহকদের টাকা লেনদেন নিয়ে হট্টগোল করতে দেখা যায়।

ভুক্তভোগীরা বলেন, এই সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রতি বছর জমি বেচাকেনার নামে কোটি টাকার বাণিজ্য হচ্ছে। দলিল মূল্যের ওপর ধার্য থাকে অতিরিক্ত টাকার পরিমাণ কত হবে। দলিল লেখকদের মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রার টাকা নেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন, ‘উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে জমি বেচা-বিক্রি করতে হলে টাকা নেওয়ার তালে থাকেন দলিল লেখকরা। দলিল লেখকরা ও সাব-রেজিস্ট্রার বিভিন্ন অজুহাতে টাকা নেন। দলিলে ভুল, খতিয়ানে ভুল, আইডি কার্ডে ভুল, খালি ভুল আর ভুল ধরে টাকা নেওয়া হয়ে থাকে। নিরুপায় হয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে জমি বেচাকেনা করতে হচ্ছে। দলিল হয়ে গেলে অফিসের নানা খরচে ২০০-৩০০ টাকা টেবিলে টেবিলে দিতে হয়।’

 

দলিল লেখক কমিটির সভাপতি মো. ইউছুফ মুরি বলেন, ‘প্রতি দলিলে যে টাকা নেওয়া হয় তার কিছু অংশ মসজিদে দান করা হয়। কিছু টাকা অফিসে খরচ হয়, আর কিছু টাকা পিয়ন নেয়। দলিল লেখকরা অতিরিক্ত কোনো টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে নিচ্ছে না। তবে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন সমস্যা থাকায় নিতে হয়।’

সাব-রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ আরমান  বলেন, ‘সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে এভাবে টাকা নেওয়ার নিয়ম নেই। তবে যিনি প্রকাশ্যে টাকা নিচ্ছেন তার সরকারি ভাতা মাত্র ৬০ টাকা। প্রকাশ্যে ওঠানো টাকার কিছু অংশ মসজিদ, অফিস ও তার মধ্যে ভাগ হয়। এ ছাড়াও দলিল লেখকরা অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে, বিষয়টি নিয়ে সমিতির সঙ্গে আলাপ করা হচ্ছে। তবে দলিল, খতিয়ান, আইডি কার্ডে ভুল থাকলে সেসব বিষয়ে লেখকদের জানালে তারা অতিরিক্ত অর্থ বাণিজ্যের সুযোগ নেয়।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকার অনিয়মই যেনো নিয়ম! - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকার অনিয়মই যেনো নিয়ম! সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে - dainik shiksha সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল আকাশে মেঘ দেখলেই স্কুল ছুটি - dainik shiksha আকাশে মেঘ দেখলেই স্কুল ছুটি প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023448467254639