ঘুষ গ্রহণের ফোনালাপ ফাঁস এবং অনিয়মের অভিযোগে একটি বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল রোববার সকালে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি মো. আবুল কালাম এ পরীক্ষা স্থগিত করে দেন। ঘটনাটি বরগুনার তালতলী উপজেলার বগীরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। এ নিয়োগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইদ্রিসুর রহমান এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. দেলোয়ার সিকদারের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, গত বছরের ৮ আগস্ট তালতলীর বগীরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী, নৈশপ্রহরী ও অফিস সহায়ক পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক ৩টি পদে ২৪ জন প্রার্থী আবেদন করেন। গতকাল রোববার বরগুনা জেলা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শনিবার রাতেই নিয়োগ পরীক্ষায় নৈশপ্রহরী পদে টাকা লেনদেনের ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যায়।
ফোনালাপে পুরুষ কণ্ঠে একজন বলেন, ‘তুমি তাড়াতাড়ি টাকা দাও। অনেক প্রার্থী রয়েছে।’ আঙ্কেল সম্বোধন করে নারী কণ্ঠে একজন বলেন, ‘চাকরি হবে তো?’ উত্তরে পুরুষ বলেন, ‘এ নিয়ে তুমি চিন্তা কোরো না। কেউ নিয়োগ ঠেকাতে পারবে না।’ নারী বলেন, ‘আঙ্কেল, আমি তো নগদ টাকা দিতে পারব না, চেক দিতে হবে।’ এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি চেক নিতে পারব না, ওই চেক নিয়ে ব্যাংকে যাওয়ার সময় নেই।’ ফোনালাপের পুরুষ কণ্ঠ বিদ্যালয়ের সভাপতির বলে জানা গেছে।
প্রধান শিক্ষক মো. ইদ্রিসুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কার্ড ইস্যু নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছে। তাই ডিজির প্রতিনিধি নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে দিয়েছেন। তিনি কারও কাছ থেকে টাকা নেননি। বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি মো. দেলোয়ার শিকদার সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ফোনালাপের বিষয়টি মিথ্যা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লুৎফর কবির বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন।’
শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি আবুল কালাম বলেন, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কয়েকজনের কাছ থেকে সাত-আট লাখ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম সাদিক তানভীর বলেন, বিষয়টি জেনে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে।