ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের থাবায় এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে এক হাজার ৬১টি স্কুল-কলেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানে ক্ষতির পরিমান ১৬ কোটি টাকারও বেশি। মাঠপর্যায় থেকে এসব প্রতিষ্ঠান তথ্য পাঠানো হয়েছে অধিদপ্তরে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিকে ক্ষতির পরিমান জানাতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬১ স্কুল-কলেজ ক্ষতিগ্রস্ত বলে জানা গেছে। যতটুকু তথ্য পাওয়া গেছে তা প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব মাত্র। প্রাথমিকভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, জেলা-উপজেলা শিক্ষা
কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা হয়েছে। এরপর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সঠিক হিসাব বের করা হবে এবং সে অনুসারে ক্ষতি পোশানোর উদ্যোগও নেয়া হবে।
ইতোমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে প্রাথমিকভাবে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান। বৃহস্পতিবার সচিবালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই প্রাথমিক হিসাব তুলে ধরেন তিনি। এসময় মোট ২৬ জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, আম্ফানের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থানীয়দের জন্য আশ্রয়কেন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়ছে। আবার কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভেঙ্গে গেছে, পানিতে আসবাবপত্রের ক্ষতি হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং জেলাগুলোয় বেশি প্রভাব ছিল। কী পরিমাণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতি হয়েছে, কী ধরনের ক্ষতি?এসব সংস্কারের জন্য কেমন অর্থের প্রয়োজন ইত্যাদি বিষয়ে মাঠপর্যায় থেকে তথ্য দিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তবে ইতোমধ্যেই ক্ষতির একটা হিসেব বের করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার চিঠি দেয়ার পর মাঠ পর্যায় থেকে শুক্রবারই ক্ষতির প্রাথমিক তথ্য এসেছে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা শুক্রবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে একটা হিসেব আমরা বের করতে পেরেছি। সে হিসেবে এক হাজার ৬১টি মাধ্যমিক স্কুল, কলেজসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ ১৬ কোটি টাকারও বেশি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। যদিও তাদের মতে, সঠিক ক্ষতির পরিমান বের করতে আরও কিছু সময় লাগবে।
এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে উপকূলীয় অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থানীয়দের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এখন ঝড়ের প্রকোপ শেষ। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মানুষজন নিজ বাড়িতে চলে গেলে এগুলো ক্লাসের জন্য প্রস্তুত রাখা হবে। এ ছাড়া যেখানে ঘূর্ণিঝড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতি হয়েছে সেগুলো তালিকা করা হবে। কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে? সেটা নিরূপণ করার জন্য মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তালিকা পেলে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংস্কার করা হবে।