চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে বেসরকারিভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু। নৌকা প্রতীকে মোট ৫২ হাজার ৯২৩ ভোট পেয়েছেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির (জাপা) লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মো. শামসুল আলম পেয়েছেন এক হাজার ৫৭২ ভোট।
রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বেসরকারিভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, এই আসনে মোট ভোট পড়েছে ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ।
চট্টগ্রাম মহানগরীর আটটি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত আসনটিতে মহিউদ্দিন বাচ্চু ও শামসুল আলম ছাড়া অন্যদের মধ্যে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী দীপক কুমার পালিত (সোনালী আঁশ) পেয়েছেন এক হাজার ৩০ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী রশীদ মিয়া (ছড়ি প্রতীক) পেয়েছেন ৫৭৯ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আরমান আলী (বেলুন প্রতীক) পেয়েছেন ৪৮০ ভোট ও মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া (রকেট প্রতীক) পেয়েছেন ৩৬৯ ভোট।
এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৮৮ হাজার ৬৩৮ জন। এর মধ্যে দুই লাখ ৪৮ হাজার ৯৩৮ জন পুরুষ এবং দুই লাখ ৩৯ হাজার ৬৭৭ জন নারী। উপনির্বাচনে মোট ভোটগ্রহণ হয়েছে ৫৭ হাজার ১৫৩টি, যা মোট ভোটারের ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ।
সকাল ৮টা থেকে এই আসনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। শুরুতে কয়েকটি কেন্দ্রে মোটামুটি ভোটার উপস্থিতি দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারশূন্য হয়ে পড়ে কেন্দ্রগুলো। নগরীর বাদুরতলা এলাকার কেন্দ্রগুলোতেও কম ছিল ভোটার সংখ্যা। তাই ওই এলাকার ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে স্থানীয় মসজিদের মাইকে দুই দফা মাইকিংও করা হয়।
এদিকে, ভোটগ্রহণকালে মারধরের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আরমান আলী। তার অভিযোগ, ১০টি কেন্দ্রে এজেন্ট দিলেও তার এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাছাড়া নগরীর প্রাণহরি বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে তার ওপর হামলা চালান আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকে বেঁচে ফিরলেও ডা. ফজলুল হাজারা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে ফের তার ওপর হামলা চালানো হয়। পরে পুলিশ তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আট জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং দুই জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে দিনভর মাঠে ছিল পুলিশ, আনসার সদস্য, র্যাবের চারটি টিম ও ৪ প্লাটুন বিজিবি। এর মধ্যে পুলিশ ও আনসার সদস্য মিলে প্রতি কেন্দ্রে ১৬ থেকে ১৭ জন, গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ১৭ থেকে ১৮ জন দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এছাড়া পুলিশ ও এপিবিএনের সমন্বয়ে আট ওয়ার্ডে আটটি মোবাইল ফোর্স ও চারটি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত ছিল।
গত ২ জুন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এই আসনের সংসদ সদস্য আফছারুল আমীন। দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন তিনি। তার মৃত্যুর পর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে ভোটের আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন।