চবিতে নিজ গ্রুপের হাতেই মা*রধরের শিকার ছাত্রলীগ কর্মী

দৈনিক শিক্ষাডটকম, চবি |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, চবি : প্রিয় খেলোয়াড়কে নিয়ে মিম বানিয়ে ট্রল করা ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র ছাত্রলীগের এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ও অভিযুক্ত সবাই শাখা ছাত্রলীগের উপ-গ্রুপ সিক্সটি নাইনের অনুসারী। যদিও ওই ঘটনার পরে গ্রুপ পরিবর্তন করে সিএফসিতে যোগদান করেন ভুক্তভোগী মোস্তফা কামাল।

ভুক্তভোগী ছাত্রলীগের কর্মী মোস্তফা কামাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযুক্ত ৩ ছাত্রলীগ কর্মী। ছবি : সংগৃহীত

জানা গেছে, রাজনীতিতে বেশি সক্রিয়তা ও আভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরেই নিজ গ্রুপেরই ওই কর্মীকে বেধড়ক মারধর করে রক্তাক্ত করেছে ছাত্রলীগের কর্মীরা।

শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে মোস্তফা কামাল তার নিজ ফেসবুক একাউন্টে ৩ জন ছাত্রলীগের কর্মীর নাম উল্লেখ করে পোস্ট করেন। পোস্টে অভিযুক্ত তিনজনের নাম উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দৃষ্টি আকর্ষণও করেন তিনি। যদিও মারধরের ঘটনাটি গত বছরের ১৮ আগস্ট সংগঠিত হয়েছিলো বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী।

   

পোস্টে উল্লেখিত অভিযুক্ত ৩জন হলেন, সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মাহফুজ আনাম ফারুক, ইতিহাস বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের আরিফ রাসেল এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের একই শিক্ষাবর্ষের জোবায়ের আহমেদ। তারা সকলেই শাখা ছাত্রলীগের উপ-গ্রুপ সিক্সটি নাইনের অনুসারী। এদিকে ফেসবুকে ওই পোস্টের পর থেকে অভিযুক্তদের ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে।

সেদিনের ঘটনার ব্যাপারে মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, শুধু তিনজন না, সেদিন প্রায় ১৫-২০ জন আমাকে ধরে আমার চোখ বেধে মারধর করেছিল। তারা ইস্যু খুঁজছিল কিভাবে আমাকে মারবে। তারা পলিটিকাল কারণে আমাকে মেরেছে। তারা আমার ইমিডিয়েট সিনিয়র এজন্য মেসি ও রোনালদোকে ট্রল করা নিয়ে আমাকে বিচার করার নামে আমাকে মারধর করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমি ওদের ধারার রাজনীতি করতাম না এজন্য হয়তো ওদের কাছে আমি রিস্কি ছিলাম তাই ওরা পথের কাঁটা সরাইতে চেয়েছে। এজন্য একটা তাদের একটা ইস্যু দরকার ছিল তারা খেলাধুলার ইস্যুটাকে নিয়ে আমাকে হলের টিভি রুমে ডেকে নিয়ে মারধর করেছে। এ সময় ১৫-২০ জনের মতো আমাকে মারধর করে এদের মধ্যে তিনজনকে আমি চিনতে পারি। চোখে মুখে কাপড় বেঁধে রাখায় আমি বাকিদের চিনতে পারিনি।

অভিযুক্ত জোবায়ের আহমেদের কাছে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোস্তফা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে সে আমাদের হলেরই (শাহজালাল) ছোট ভাই। সে আমার নামে ভুল অভিযোগ দিয়েছে, সেটা হচ্ছে আমি নাকি ওকে পিছন থেকে বেঁধে রেখেছিলাম। এটা পুরোপুরি মিথ্যা কথা। আমি ওকে কোনো টাচও করি নাই। তবে এটা সত্যি যে পলিটিক্যাল কিছু ছেলেপেলে ওকে চড় থাপ্পর দিছে। কিন্তু কেউ ওকে এক্সট্রিম লেভেলের কিছু করে নাই । আর কেউ কখনো কি নিজের বগির ছেলেকে রামদা দিয়ে কোপায়? এ ধরনের অভিযোগ আনার জন্য ওর পিছনে থেকে ওকে কেউ উস্কানি দিচ্ছে। রামদা দিয়ে কোপানোর কথাটা একদম ভিত্তিহীন।

অভিযুক্ত আরোও দুইজন মাহফুজ আনাম ফারুক ও আরিফ রাসেলের সঙ্গে এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের পরেও কোনো সাড়া মেলেনি।

মারধরের বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা সাইদুল ইসলাম সাঈদ বলেন, এটা দীর্ঘদিন আগের কথা। ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি ছিল। যদি সত্যিকার অর্থেই কোনো কিছু ঘটে থাকতো তাহলে সেটা দেখার বিষয় ছিল তৎকালীন কমিটির। বিষয়টি এতদিন সামনে আসেনি তার মানে এর পেছনে নিশ্চয়ই কেউ ইন্ধন যোগাচ্ছে। তবে কামাল যেভাবে বিষয়টিকে প্রচার করেছেন আসলে বিষয়টি ওরকম কিছু হয়নি। তবে আমরা এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।

তৎকালীন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এই ব্যাপারে এখনো কোনো কিছু অবগত নই। এ বিষয়ে এখন যারা দায়িত্বে আছে তারা ভালো বলতে পারবে। আমি দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে এ ঘটনা ঘটলেও এ বিষয়ে আমার কাছে তখন কোনো তথ্য আসেনি। হয়তো জুনিয়র সিনিয়রদের ঝামেলা এ জন্য আমাদের কাছে পৌঁছানো হয়নি। আসলেই ওই ছেলে মারধরের শিকার হয়েছে কিনা এ বিষয়ে তদন্ত হওয়া দরকার।

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. নুরুল আজিম সিকদার বরাবর ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম মুরাদ জানান, গত বছর এরকম কোনো ঘটনার অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। আসলেও আমার জানা নেই। তবে আমরা বিষয়টা খতিয়ে দেখবো।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই - dainik shiksha একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই অবসর কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার ফের তাগিদ - dainik shiksha অবসর কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার ফের তাগিদ সুধা রানী হাদিসের শিক্ষক পদে : এনটিআরসিএর ব্যাখ্যা - dainik shiksha সুধা রানী হাদিসের শিক্ষক পদে : এনটিআরসিএর ব্যাখ্যা শরীফ-শরীফার গল্প বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবই থেকে - dainik shiksha শরীফ-শরীফার গল্প বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবই থেকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক এক রুমে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ, পাঠদান বন্ধ - dainik shiksha এক রুমে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ, পাঠদান বন্ধ যৌ*ন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে - dainik shiksha যৌ*ন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038790702819824