চবিতে ফের বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ

চবি প্রতিনিধি |

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত নিয়োগ দেওয়া নিয়ে সমালোচনা ও শিক্ষক সমিতির আপত্তির মধ্যেই আবারও ৭ জন শিক্ষক অতিরিক্ত নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪৩ তম সিন্ডিকেট সভায় এ নিয়োগ দেওয়া হয়। আজ রোববার তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছেন।

এর আগে গত বুধবার বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ নেই জানিয়ে উপাচার্যকে চিঠি দেয় চবি শিক্ষক সমিতি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সিন্ডিকেটের ৫৪৩ তম সভায় বিভিন্ন বিভাগে নতুন ২৩ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে বিজ্ঞাপিত ৫ জনের বিপরীতে ৭ জন, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে বিজ্ঞাপিত ৪ জনের বিপরীতে ৭ জন, ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগে বিজ্ঞাপিত ২ জনের বিপরীতে ৩ জন ও নৃবিজ্ঞান বিভাগে বিজ্ঞাপিত ১ জনের বিপরীতে ২ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। এ ছাড়া পরিসংখ্যান বিভাগে বিজ্ঞাপিত ৪ জনের বিপরীতে ৪ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়।

এর আগে সিন্ডিকেটের ৫৩৮তম সভায় বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত নিয়োগ ‘শুদ্ধাচার পরিপন্থী’ উল্লেখ করে অতিরিক্ত নিয়োগ না দিতে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি ওই সভায় বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত ১৩ জন শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে সিন্ডিকেটের ৫৩৯ সভায় পূর্বের সিদ্ধান্তকে কাটছাঁট করে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে চাহিদা বিবেচনা করে বিজ্ঞাপিত পদের চেয়ে কম বা বেশি নিয়োগ দেওয়া যাবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে আগের সিন্ডিকেটে বাতিল করা ১৩ জনসহ ১৭ জনকে অতিরিক্ত নিয়োগ দেওয়া হয়।

সিন্ডিকেটের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা সমালোচনা হয়। এ নিয়ে একটি দৈনিকে গত বছরের ২৩ অক্টোবর ‘নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই মানল না সিন্ডিকেট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

পরবর্তীতে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া পদের অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে জানিয়ে উপাচার্যকে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এবং আওয়ামী ও বামপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘হলুদ’। সর্বশেষ গত বুধবার বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ নেই জানিয়ে উপাচার্যকে আবারও চিঠি দেয় শিক্ষক সমিতি।

এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বরেণ্যে শিক্ষাবিদ মু. সিকান্দার খান। তিনি বলেন, ‘এই কাজটি  কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের উচিত শিক্ষক সমিতি যেটা বলেছেন, সেটার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া।’

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালোর জন্যই বিজ্ঞাপিত পদের কম বা বেশি শিক্ষক নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর। তিনি বলেন, ‘এটা বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচলিত আছে। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালোর জন্য ভালো মানের প্রার্থী পাওয়া গেলে বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত শিক্ষক নেওয়া হয়। বিজ্ঞাপিত পদের অতিরিক্ত বা কম নেওয়ার বিষয়ে সিলেকশন বোর্ড ও সিন্ডিকেটের এখতিয়ার রয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার ও সহউপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তারা রিসিভ করেননি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে - dainik shiksha চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ - dainik shiksha সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন - dainik shiksha রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? - dainik shiksha বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে - dainik shiksha ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি - dainik shiksha প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027048587799072