চবির দুই ছাত্রলীগ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

চবি প্রতিনিধি |

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ মানবিক কারণ দেখিয়ে প্রত্যাহার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ৪ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। তবে বিষয়টি এতদিন গোপন থাকলেও বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) জানাজানি হয়।

এ দুই শিক্ষার্থী হলেন আইন বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির খালেদ মাসুদ ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় বর্ষের আরাফাত রায়হান। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি নেই। খালেদ বিলুপ্ত কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক আর আরাফাত উপদপ্তর সম্পাদক পদে ছিলেন। মারধরের শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) সদস্য।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘তাদের মা-বাবা এসে আমাদের মুচলেকা দিয়েছেন। এ ছাড়া এর আগেও তাদের ইয়ার ড্রপ ছিল, ১৫ তারিখ শুরু হওয়া পরীক্ষায় যদি তাদের অংশগ্রহণ করতে দেওয়া না হতো তাহলে তাদের ছাত্রত্ব থাকত না। মানবিক দিক বিবেচনায় তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, বহিষ্কারের মেয়াদের মধ্যে বহিষ্কৃত কেউ ক্যাম্পাসে কিংবা হলে অবস্থান করতে পারবেন না। এ ছাড়া কোনো একাডেমিক কার্যক্রমেও অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু বহিষ্কৃত হয়েও তারা দাপিয়ে বেড়িয়েছেন ক্যাম্পাস। থেকেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক বিষয়টি প্রশাসনকে বারবার অবহিত করলেও কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

ছবি: সংগৃহীত

এর আগে ১৯ জুন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে চায়ের দোকানে চেয়ারে বসা কেন্দ্র করে চবিসাস সদস্য ও ঢাকা স্টেটের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি দোস্ত মোহাম্মদকে মারধর করেন শাখা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ ও  উপদপ্তর সম্পাদক আরাফাত রায়হান। এ ঘটনায় (২২ জুন) অভিযুক্ত দুজনকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু বহিষ্কারাদেশ চার মাস যেতে না যেতেই প্রত্যাহার করা হলো। এর আগে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের একই কারণ দেখিয়ে খালেদ মাসুদের বহিষ্কারাদেশ আরও একবার প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ বলেন, ‘আমার ওপর অকারণে হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু বিচার করেনি। তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য অপরাধীদের ছয় মাস বহিষ্কার করেছিল। এখন এই সামান্য শাস্তিও নানান নাটক সাজিয়ে প্রত্যাহার করা হয়েছে; যা আমার সঙ্গে  প্রতারণা ও অমানবিকতার শামিল। এ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অপরাধীদের উৎসাহিত ও পুরস্কৃত করল।’

চবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু বলেন, ‘চবি প্রশাসনের নির্লিপ্ততা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে অপরাধীদের কাছে জিম্মি তারা। বারবার অপরাধীদের ক্ষমা করে সেটিই প্রমাণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বর্তমান প্রশাসনের কাছে সুবিচার প্রত্যাশা করাই যেন অপরাধ। আমরা প্রশাসনের এমন লজ্জাজনক সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ - dainik shiksha জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর - dainik shiksha বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা - dainik shiksha হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল - dainik shiksha পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051860809326172