চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজ, সম্পাদক আব্দুল হক

চবি প্রতিনিধি |

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০২৩ এর ১১ পদের নির্বাচন শেষ হয়েছে। সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী। সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আবদুল হক। তারা দু'জনেই হলুদ দলের একটি পক্ষ হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। হলুদ দলের এ পক্ষ প্রশাসনের বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ে সমালোচনা করে আসছিলেন। ১১ পদের সাতটি পদেই এই পক্ষের মনোনীতরা নির্বাচিত হয়েছেন।  

চবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আওয়ামী ও বামপন্থী শিক্ষকদের রাজনৈতিক সংগঠন ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের (হলুদ দল) দুইটি পক্ষে বিভক্ত হয়ে অংশগ্রহণ করেছেন। উল্লেখ্য হলুদ দলের দ্বিতীয় পক্ষকে হলুদ দলের ‘বিদ্রোহী’ ও ‘প্রশাসনপন্থী’ সম্বোধন করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে ১ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে হলুদ দলের দ্বিতীয় পক্ষ ‘বিদ্রোহী’ ও ‘প্রশাসনপন্থী’ না লিখতে অনুরোধ করেন।

 

বুধবার সকাল নয়টা থেকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের মিলনায়তনে ভোট কার্যক্রম শুরু হয়। ভোট কার্যক্রম চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। মোট ৮৯৫ জন ভোটারের মধ্যে ৭৪৩ জন ভোট দিয়েছেন। বুধবার ৫৮৫ জন ভোট দিয়েছেন। এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি অগ্রিম ভোটে ১৫৮ জন ভোট দেন। নির্বাচনে ১১ পদের জন্য মোট ২৩ প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। ভোট গণনা শেষে বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় বিজয়ীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। 

সভাপতি পদে ৩৪৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী। তার বিপরীতে সভাপতি পদে ২৯৪ ভোট পেয়েছেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহ আল মামুন এবং যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ড. মো. সহিদ উল্লাহ পেয়েছেন ৬৮ ভোট। সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলা উদ্দিন। তিনি ৩৬৪ ভোট পেয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৫০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন অধ্যাপক আবদুল হক। তার বিপরীতে একই পদে ড. মো. হেলাল উদ্দীন পেয়েছেন ৩৪৪ ভোট।

৩৬৭ ভোট পেয়ে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন জিন প্রকৌশল ও জীব বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান। ৩৮১ ভোট পেয়ে কোষাধ্যক্ষ পদে জয়ী হয়েছেন হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলী আরশাদ চৌধুরী।

ছয়টি সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. রাকিবা নবী, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শেখ সাদী, ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসের ড. মো. দানেশ মিয়া, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক এস এম সালমত উল্ল্যা ভূঁইয়া, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ফরিদুল ইসলাম ও জিন প্রকৌশল ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক লায়লা খালেদা।

গত ১৮ জানুয়ারি থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু হয়। ২৫ জানুয়ারি দুপুর ১টায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়। ৩০ জানুয়ারি দুপুর ১২টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ দেওয়া হয়।

হলুদ দলের প্রথম পক্ষের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন সভাপতি পদে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, সহ-সভাপতি পদে নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলা উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক পদে ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আবদুল হক, কোষাধ্যক্ষ পদে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলী আরশাদ চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক পদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুলতানা সুকন্যা বাশার, সদস্য পদে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক এস এম সালমত উল্ল্যা ভূঁইয়া, ওশোনোগ্রাফি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. এনামুল হক, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শেখ সাদী, ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৌমিতা পাল, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল করিম, জিন প্রকৌশল ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক লায়লা খালেদা।

হলুদ দলের দ্বিতীয় পক্ষ বা ‘বিদ্রোহী’ পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন সভাপতি পদে ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড আবদুল্লাহ মামুন, সহ-সভাপতি পদে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদ, সাধারণ সম্পাদক পদে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের ড. মো. হেলাল উদ্দীন, কোষাধ্যক্ষ পদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মীর সাইফুদ্দীন খালেদ চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে জিন প্রকৌশল ও জীব বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান। সদস্য পদে পালি বিভাগের ড. জ্ঞান রত্ন শ্রমণ, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ঝুলন ধর, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ড. মোহাম্মদ ফরিদুল আলম, ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসের ড. মো. দানেশ মিয়া, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. রাকিবা নবী ও মার্কেটিং বিভাগের ড. সজীব কুমার ঘোষ।

এছাড়া হলুদ দল থেকে আরও মনোনয়ন নিয়ে সভাপতি পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সহিদ উল্লাহ।

এ ছাড়া বিএনপি ও জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সাদা দল ২০১২ সাল থেকে এবং জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম গত বছর থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রয়েছে। সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের পদ ১১টি। এগুলো হলো একজন সভাপতি, একজন সহ-সভাপতি, একজন কোষাধ্যক্ষ, একজন সাধারণ সম্পাদক, একজন যুগ্ম-সম্পাদক ও ছয়জন সদস্য। সমিতির সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল গত বছর ১৭ জানুয়ারি। এক বছরের জন্য এতে সভাপতি পদে ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক সেলিনা আখতার ও সাধারণ সম্পাদক পদে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক সজীব কুমার ঘোষ নির্বাচিত হয়েছিলেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রায় দুই লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পাঁচ লাখ খাতা চ্যালেঞ্জ - dainik shiksha প্রায় দুই লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পাঁচ লাখ খাতা চ্যালেঞ্জ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা, রোজ সম্মানী পাবেন ৫০০ টাকা - dainik shiksha ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা, রোজ সম্মানী পাবেন ৫০০ টাকা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে বেসরকারি মেডিক্যাল-ডেন্টালের ভর্তি ফি নির্ধারণ - dainik shiksha বেসরকারি মেডিক্যাল-ডেন্টালের ভর্তি ফি নির্ধারণ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক ঢাবিতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধে গণভোটের দাবিতে বিক্ষোভ - dainik shiksha ঢাবিতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধে গণভোটের দাবিতে বিক্ষোভ নিম্নমানের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করে দেয়া হবে - dainik shiksha নিম্নমানের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করে দেয়া হবে আসিফ নজরুলের সাথে কি ঘটেছিল জেনেভা বিমানবন্দরে - dainik shiksha আসিফ নজরুলের সাথে কি ঘটেছিল জেনেভা বিমানবন্দরে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031819343566895