ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম অধিনায়কত্ব কাঁধে বর্তেছিল আনওয়ারুল কবিরের। ক্রিকেট বিশ্বে অবশ্য তিনি শামীম কবির নামেই পরিচিত ছিলেন। দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভুগছিলেন, ছিলেন লাইফ সাপোর্টেও। সোমবার (২৯ জুলাই) সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলাদেশ দলের সাবেক এই অধিনায়ক। কবে নাগাদ তার দাফন করা হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। তবে সন্তান আমেরিকা থেকে ফিরলেই দাফন এবং কাফনের কার্য সম্পাদন করা হবে ঘোড়াশালের পৈতৃক নিবাসে।
স্বাধীনতা অর্জনের ঠিক পরের বছর ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে গঠিত হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সে বছরই শুরু হয় ঘরোয়া ক্রিকেট। তবে তখন থেকে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় আরও পাঁচ বছর। ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারির শীতের এক সকালে এমসিসির বিপক্ষে প্রথম টাইগারদের জার্সি গায়ে চড়িয়ে টস করতে মাঠে নামেন শামীম কবির। তখনও ওয়ানডে স্ট্যাটাসটা মেলেনি বাংলাদেশের। ঢাকাতে প্রথম আন্তর্জাতিক কোনো ম্যাচ খেলতে নামে টাইগাররা। এই ম্যাচে ৩০ রান করেন অধিনায়ক। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি অমীমাংসিত থেকেই শেষ হয়েছিল।
আর প্রথম ম্যাচেই অধিনায়কত্ব করতে নেমে যার নাম লেখা হয়ে যায় ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে, তিনি শামীম কবির। প্রথম অধিনায়ক হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রথম ম্যাচে দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার পরের বছরই ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন তিনি। তবে দেশের ক্রিকেটের হাত ছাড়েননি। মাঠের ক্রিকেটের সাথে না থাকলেও, দেশের ক্রিকেটের মান উন্নয়নের জন্য করে গেছেন নিরলস পরিশ্রম।
নিজের ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময়টা কাটিয়েছেন ঢাকার আজাদ বয়েস ক্লাবের জার্সি গায়ে দিয়ে। ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে অবসরে যান ১৯৭৬-৭৭ খ্রিষ্টাব্দের মৌসুম শেষ করে।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বোর্ডের মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, ‘জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম অধিনায়ক শামিম কবিরের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যা যা করা প্রয়োজন সব করা হবে।’
এর আগে জাতীয় ক্রিকেট দলের অসুস্থ সাবেক এ অধিনায়কের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের ঘোষণা দিয়েছিল বিসিবি। সেই সাহায্য হাতে না নিয়েই অনন্ত পথে যাত্রা করলেন অসম্ভব ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন, মনেপ্রাণে অভিজাত, সর্বজন শ্রদ্ধেয় সাবেক শামিম কবির।
