ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন যোগ দেয়া সহকারী শিক্ষকদের বরণ ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বিদায় সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। তবে এ অনুষ্ঠান আয়োজনে শিক্ষকদের কাছ থেকে জোর করে চাঁদা আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বিরুদ্ধে। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, পর্যাপ্ত ফান্ড থাকলেও নেতারা উপজেলার ১৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা হারে চাঁদা নিয়েছেন। এ নিয়ে তাদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার শান্তা কমিনিউটি সেন্টারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রাহিমউদ্দিনের সভাপতিত্বে সহকারি শিক্ষকদের বরণ ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ওই বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও -৩ আসনের সংসদ সদস্য হাফিজউদ্দিন আহমেদ।
শিক্ষকদের একাংশ বলছে, জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার ১৫৬ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ বিদ্যালয় থেকে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বিরুদ্ধে। সমিতির ফান্ডে যথেষ্ট অর্থ জমা থাকার পরেও তারা বিদ্যালয়গুলোর কাছ থেকে জোর করে চাঁদা আদায় করেছেন। ওই সমিতির জমি বন্দোবস্ত ও ঘর নির্মাণের নামে প্রতি স্কুলে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা আদায় করা হয়। কিন্তু বাস্তবে সমিতির জমি ও ঘরের কোনো অস্তিত্ব নেই।
মহলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এই শিক্ষক সমিতিকে আমরা মানি না। এরা সমিতির নামে বিভিন্ন কৌশলে টাকা তোলে আর খায়।
চেংমারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এই সমিতি তাদের নিজের লোকদেরকে বিভিন্ন পদ দিয়ে কমিটি কুক্ষিগত করেছে। সমিতির জমি ও ঘর নির্মাণের নামে তারা স্কুল প্রতি ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা চাঁদা তুলেছে। কিন্তু জমি ও ঘরের ব্যবস্থা করেনি। অনুষ্ঠানে নতুন যোগদানকৃত শিক্ষকদের মাত্র একটি করে রজনিগন্ধার স্টিক ও বিদায়ী শিক্ষকদের একটি করে ক্রেস্ট দিয়ে অনুষ্ঠানের দায় সেরেছে। অথচ এর আগের কমিটি বিদায়ী শিক্ষকদেরকে জামা-কাপড় ও ক্রেস্ট দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, উপজেলার অর্ধেক স্কুল তাদের এ রকম স্বেচ্ছাচারিতার জন্য আরেকটি শিক্ষক সমিতি করার কথা ভাবছে।
উপজেলা শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন চাঁদা তোলার কথা স্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্কুল প্রতি ১০০ থেকে ৩০০ টাকা করে টাকা চাঁদা নেয়া হয়েছে। আমি ১৭ হাজার টাকা খরচ করছি, বাকি টাকার হিসেব সভাপতি ও সহ-সভাপতি জানেন।