সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ এর দাবিতে আবারও আন্দোলনে নেমেছে চাকরি প্রত্যাশিরা। তাদের দাবি, সরকারি চাকরিতে পুরুষের জন্য ৩৫ ও নারীদের জন্য ৩৭ বছর ঘোষণা করতে হবে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক 'শিক্ষার্থী সমাবেশে' এ দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে সরকারি চাকরিতে ৩৫ এর আন্দোলন করেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৪০ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত সুযোগ রয়েছে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের। পাকিস্তান আর বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের আর কোন দেশে চাকরির বয়সসীমা ৩০ নেই।
কিন্তু আমাদের দেশে ফ্যাসিবাদী সরকার একটা শৃঙ্খলা তৈরি করে রেখেছিল।
আমরা ৩৫ চাই কারণ করোনাভাইরাস মহামারীতে যখন সারাবিশ্ব স্থবির ছিল তখন কোনো পরীক্ষা হয় নাই। কোনো ক্লাস হয় নাই। আড়াই বছর আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় সেশন জটে আটকে ছিল। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকার একটি বৈষম্য করেছে। তাদের উচিত ছিল সকল বিষয়গুলো পর্যালোচনা করা।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সরকারি চাকরিতে ৫৬ ভাগ কোটা ছিল। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে নিয়োগ পরীক্ষায় একের পর এক প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। দলীয়করণ হয়েছে। অনিয়ম হয়েছে। ফলে অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থীর চাকরি হয় নাই। মেধাবীদের জন্য হলেও রাষ্ট্রের উচিত ছিল চাকরিতে বয়সসীমা ছেলেদের জন্য ৩৫ ও মেয়েদের জন্য ৩৭ বছর করা। পর্যালোচনা কমিটি সারাবিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট অনুধাবন করে ৩৫ ও ৩৭ সুপারিশ করেছিল। সেই সুপারিশ আমলে না নিয়ে কোন শক্তির বলে আমাদের ৩২ দিলেন তা আমাদের বোধগম্য নয়।
আমাদের প্রাণের দাবি যতক্ষণ না পর্যন্ত ৩২ এর শৃঙ্খলা ভাঙ্গা না হবে এবং ৩৫ ঘোষণা করা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।
আমরা কেউ ভালো নেই। আমরা ভালো থাকতে চেয়েছিলাম বলেই জুলাই অভ্যুত্থানে রাজপথে নেমেছিলাম। ভালো থাকতে চেয়েছিলাম বলেই রক্ত দিয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এই সরকারের কাছ থেকে যা আশা করেছিলাম তা আমরা পাই নি। তাই আমরা বলে দিতে চাই ৪৭ তম বিসিএসের আগে ৩৫ বাস্তবায়ন করে প্রজ্ঞাপন দিয়ে আমাদের রাজপথ থেকে পড়ার টেবিলে নিয়ে যাবেন। না হলে আমরা রাজপথে থাকব।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ নভেম্বর আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৩২ বছর ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘদিন আন্দোলনের মুখে সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এবার সরকারের সেই সিদ্ধান্ত না মানার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।