চাকরির ১৩ বছর পর জানা গেলো শিক্ষকের বিএড সনদ জাল

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি |

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে শিক্ষকতা করার ১৩ বছর পর জানা গেলো শিক্ষকের বিএড পাসের সনদ জাল। সনদ জালিয়াতির এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তর থেকে ইতোমধ্যে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। 

জানা যায়, ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে উপজেলার দরিবিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন আরজান আলী নামের এক ব্যক্তি। তিনি সেখানে রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিএড সনদ দাখিল করেন। পরে তিনি ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২১ মার্চ  উপজেলার জোড়াদহ বহুমূখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন। সেখানেও তিনি বেসরকারি ওই প্রতিষ্ঠানটির নামে ভুয়া বিএড সনদ জমা দেন। এর এক বছর পর ওই শিক্ষক একই প্রতিষ্ঠানে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও একটি বিএড পাশের সনদ জমা দেন। একই প্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষকের একই বিষয়ে দুটি সনদ জমা দেয়ায় প্রশ্ন দেখা দেয় তার সনদের বৈধতা নিয়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখি হয়। এ নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তর থেকে তার বিএড পাশের সনদের বৈধতা যাচাইয়ের জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে একটি চিঠি দেয়া হয়।

কয়েকজন শিক্ষক জানান, জাতি গড়ার কারিগর একজন শিক্ষক যদি এ ধরনের জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েন তাহলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সুশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। তারা ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবি করেন।

জেলা শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ১ জুন ওই শিক্ষকের বিএড পাশের সনদের বৈধতা যাচাইয়ের জন্য বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর একটি চিঠি দেয়া হয়। গত ৯ জুলাই রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকার সিনিয়র সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ. কে. এম. ফিরোজ উদ্দিন সরকার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ওই ব্যক্তির নামে তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে বিএড পাশের কোনো ইস্যু করা হয়নি বলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করেন।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মনিরুল ইসলাম জানান, ওই শিক্ষকের সনদ যাচাইয়ের পর সেটি জাল বলে প্রমাণিত হয়েছে। ফলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত ৫ অক্টোবর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল বারী জানান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের চিঠির আলোকে গত ১০ অক্টোবর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটিকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জোড়াদহ বহুমূখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী জমির উদ্দিন বলেন, এটি আমাদের জন্য লজ্জাজনক। ইতোমধ্যে আামরা তাকে শোকজ করেছি। আইনি প্রক্রিয়া মেনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কামাল হোসেন মিয়া বলেন, ইতোমধ্যে কমিটির সভা করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে ওই শিক্ষক উপস্থিত হননি। তবে আমরা তাকে শোকজ করেছি। দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
হামলায় মোল্লা কলেজের ৩ শিক্ষার্থী নিহত, দাবি কর্তৃপক্ষের - dainik shiksha হামলায় মোল্লা কলেজের ৩ শিক্ষার্থী নিহত, দাবি কর্তৃপক্ষের সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত নৈরাজ্যকারীদের প্রতিহত করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান কাজ: সারজিস - dainik shiksha নৈরাজ্যকারীদের প্রতিহত করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান কাজ: সারজিস মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করতে হবে: নুর - dainik shiksha অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করতে হবে: নুর কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025169849395752