চাকরির ১৪ বছর পর প্রমাণ হলো নিবন্ধন সনদ জাল, মামলা

দৈনিক শিক্ষাডটকম, যশোর |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, যশোর: যশোর মনিরামপুর উপজেলার বাহিরঘরিয়া আলিম মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক হাদিউজ্জমানের চাকরির ১৪ বছর পর তার নিবন্ধন সনদটি জাল প্রমাণিত হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) সম্প্রতি এই সনদটি যাচাই বাছাই শেষে জাল প্রমাণিত হওয়ায় প্রভাষক হাদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে।

মাদরাসার অধ্যক্ষ আবদুল মালেক বাদী হয়ে মনিরামপুর থানায় মামলাটি করেন। তবে এখনও চাকরি থেকে হাদিউজ্জামানকে বহিষ্কার করা হয়নি। বিষয়টি গত ২৮ মার্চ জানাজানির পর শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। 

অভিযোগ উঠেছে, মনিরামপুর উপজেলার বাহিরঘরিয়া-গোপালপুর আলিম মাদরাসার হাদিউজ্জামানকে ২০১০ সালের ১৫ জুন ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর পরপরই তিনি এমপিওভুক্ত (ইনডেক্স নং-ঘ২০৯৬৫৬২) হন। সেই থেকে ইংরেজি প্রভাষক হিসেবে হাদিউজ্জামান চাকরি করে আসছেন। এ পর্যন্ত তিনি বেতনভাতা বাবদ সরকারের অর্ধকোটি টাকা উত্তোলন করেছেন। চাকরির প্রথম থেকেই অভিযোগ ওঠে হাদিউজ্জামানের নিবন্ধন সনদ নিয়ে। অভিযোগ রয়েছে, হাদিউজ্জামানের দাখিলকৃত ইংরেজি বিষয়ের নিবন্ধন সনদটি জাল। কিন্তু যখন যিনি সভাপতি হন তখন তাকে ম্যানেজ করে হাদিউজ্জামান চাকরি করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

বর্তমান গভর্নিং বডির সভাপতি ডা.আতিউর রহমান জাল নিবন্ধন সনদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে গত বছরের ৮ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেনের বরাবর লিখিত আবেদন করেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিকাশ চন্দ্র সরকার ওই নিবন্ধন সনদটি যাচাই বাছাইয়ের জন্য গত বছরের ১৫ নভেম্বর এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন। যাচাই বাছাই শেষে এনটিআরসিএ থেকে

হাদিউজ্জামানের সনদটি ভুয়া ও জাল উল্লেখ করে সহকারী পরিচালক (পরীক্ষা মূল্যায়ন ও প্রত্যয়ন-৩) তাজুল ইসলাম প্রত্যয়নপত্র দেন গত ১৮ জানুয়ারি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হাদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে থানায় মামলার নির্দেশনাও দেওয়া হয়। যার একটি অনুলিপি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পাঠানো হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেনের নির্দেশনায় মাদরাসার অধ্যক্ষ আবদুল মালেক বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ প্রভাষক হাদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। তবে হাদিউজ্জামান জানান, মামলার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। 

এদিকে এখনও হাদিউজ্জামানকে চাকরি থেকে বহিষ্কার না করায় এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। 

শিক্ষক প্রতিনিধি আরবি প্রভাষক তাজাম্মুল হক জানান,মানবিক কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়নি। এছাড়া গভর্নিং বডির সভাপতি ডা.আতিউর রহমান জানান, হাদিউজ্জামান কমিটির অধিকাংশ সদস্যকে ম্যানেজ করে ফেলায় তাকে বহিষ্কার করা দুরহ হয়ে পড়েছে।

অধ্যক্ষ আবদুল মালেক বলেন, বহিষ্কারের জন্য কয়েকটি সভা আহ্বান করা হলেও অধিকাংশ সদস্য উপস্থিত হননি। 

মনিরামপুর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মেহেদী মাসুদ মামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যেকোন মুহূর্তে হাদিউজ্জামানকে আটক করা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034720897674561