চাকরি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন ঢাবির সেই বরখাস্ত রেজিস্ট্রার!

ঢাবি প্রতিনিধি |

ইতিহাস বিকৃতির দায়ে চাকরিচ্যুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান চাকরি ফিরে পেতে তৎপরতা শুরু করেছেন।

সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা ও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য গত ২৭ জুন শিক্ষা মন্ত্রণলায় বরাবর আবেদন করেছেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, আবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট আইন অনুসরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে করার জন্য।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দ রেজাউর রহমান আবেদন করার কথা নিশ্চিত করে বলেন, আমি বিধি মোতাবেক আচার্যের সচিবের কাছে আবেদন করেছি। তবে এখনো এর জবাব পাইনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার (বর্তমান) এনামউজ্জামান বলেন, আমি এ ধরনের কোনো কিছু পাইনি। তাছাড়া ওনার  চাকরির মেয়াদ তো কর্মকর্তাদের অবসরের বয়স ৬২ বছর হিসেবে জুনেই শেষ হয়েছে।
২০১৬ খ্রিস্টাব্দের পহেলা জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত একটি স্মরণিকার ১৯নং পৃষ্ঠায় তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব সৈয়দ রেজাউর রহমান ‘স্মৃতি অম্লান’ নামে একটি নিবন্ধ লিখেন। সেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর বর্ণনা দেন। এসময় মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জেনারেল জিয়াকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, সাবেক সেনাপ্রধান ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করেন।

পক্ষান্তরে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের বর্ণনা দিতে গিয়ে লিখেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নেতা, যিনি পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব এবং বাংলাদেশের জাতির জনক হিসেবে বিবেচিত।

পরে ছাত্রলীগের কর্মীরা ঐতিহাসিক তথ্যের এমন বিকৃতির প্রতিবাদে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের গাড়ি ভাঙচুর ও তাকে বাসভবনে অবরুদ্ধ করে রাখেন। উপাচার্য ওই স্মরণিকাকে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন। পাশাপাশি এমন কাজের জন্য রেজিস্ট্রার রেজাউর রহমানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন। এরপর তিনি তার আগের দায়িত্ব টিএসসির ছাত্র নির্দেশনা ও পরামর্শদান দপ্তরে ফিরে গিয়েছিলেন। এছাড়া তিনি বিএনপি আমলে উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়া অধ্যাপক এসএম ফায়েজের সময়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের পদে এসেছিলেন।

এ ঘটনার তদন্তের জন্য ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ২১ জুলাই সিন্ডিকেটের সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দিলেও বিষয়টি সিন্ডিকেটে তোলা হয়নি। পরে ২৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের বৈঠকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের কাছে দাবি জানানো হয়। তারই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সিন্ডিকেটে ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। আর ট্রাইব্যুনালের সুপারিশে ২৮ মে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভায় তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই - dainik shiksha একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই অবসর কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার ফের তাগিদ - dainik shiksha অবসর কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার ফের তাগিদ সুধা রানী হাদিসের শিক্ষক পদে : এনটিআরসিএর ব্যাখ্যা - dainik shiksha সুধা রানী হাদিসের শিক্ষক পদে : এনটিআরসিএর ব্যাখ্যা শরীফ-শরীফার গল্প বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবই থেকে - dainik shiksha শরীফ-শরীফার গল্প বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবই থেকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক এক রুমে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ, পাঠদান বন্ধ - dainik shiksha এক রুমে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ, পাঠদান বন্ধ যৌ*ন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে - dainik shiksha যৌ*ন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00382399559021