চাকরি রাজস্বখাতে নেয়ার দাবিতে শিক্ষা ভবনে সেসিপের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী

মিথিলা মুক্তা |

কর্মরত জনবলসহ সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (সেসিপ) ১ হাজার ১৮৭টি পদ রাজস্বখাতে স্থানান্তরের দাবিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ঘেরাও কর্মসূচি আজ রোববার সকাল দশটায় শুরু হয়েছে।

পূর্বেঘোষিত কর্মসূচি সফল করতে সারাদেশ থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসেছেন শিক্ষা ভবনে। স্লোগান দিচ্ছেন তারা।   

তারা আরো বলেন,  শিক্ষা মন্ত্রণালয়াধীন সেসিপ প্রোগ্রামে প্রায় ৩০ শতাংশ নারী, ৭৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান-পোষ্য কর্মরত।  মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসগুলোতে  চাকরিতে যোগদানের পর থেকে এখনো ইনক্রিমেন্টবিহীন স্কেলভিত্তিক বেতনে কর্মরত আছেন তারা। দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষিত, ১০-২৪ বছরের কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই ১ হাজার ১৮৭ জনবলকে প্রকল্প শেষে চাকরিচ্যুতি থেকে রক্ষা করার দাবি জানাচ্ছি। এ ১ হাজার ১৮৭টি পরিবারকে মানবেতর জীবন-যাপন থেকে মুক্তি দিতে পদগুলো জনবলসহ রাজস্বখাতে স্থানান্তরের দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি ।

নেতারা বলছেন, এসব পদ রাজস্বখাতে স্থানান্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুশাসন দিয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ও ইতিবাচক কাজ করেছে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় এ পদগুলো রাজস্বখাতে স্থানান্তর করার সম্মতি দেয়নি। এ পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন ওই ১ হাজার ১৮৭টি পদের কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাই ওই পদগুলো রাজস্বখাতে স্থানান্তরের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। সেসিপ কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে এ স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। আজ ঘেরাও কর্মসূচি চলছে।  

সেসিপ কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার ও এডিবি যৌথ অর্থায়নে ১৯৯৯ থেকে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সেসিপ প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়। সেসিপের ফলোআপ হিসেবে ২০০৭ থেকে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের জুন মেয়াদে এসইএসডিপি হাতে নেয়া হয় এবং এর  ফলোআপ প্রজেক্ট হিসেবে সব কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি থেকে সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেসিপ) চালু করা হয়, যা চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হবে।

এই কর্মকর্তারা বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, কারিকুলাম বাস্তবায়ন, হাতে কলমে বিজ্ঞান শিক্ষা প্রসার, আইসিটিভিত্তিক শিক্ষার প্রসার, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণ, স্কুল মনিটরিং ও নিবিড় একাডেমিক সুপারভিশন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেল শক্তিশালীকরণ ও সফটওয়ারের সার্বিক তত্ত্বাবধান, সাধারণ শিক্ষা ধারার সঙ্গে চালু করা ভোকেশনাল ট্রেড কোর্স বাস্তবায়নে মনিটরিং, নকল মুক্ত পাবলিক পরীক্ষা আয়োজনে ট্যাগ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এছাড়াও জাতীয় নির্বাচনসহ সব পর্যায়ের নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন, বিজ্ঞান ও উন্নয়ন মেলা আয়োজন,বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা, জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহের বিভিন্ন ইভেন্ট পরিচালনা, শিক্ষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ আয়োজনসহ প্রশিক্ষণে মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। শিক্ষার্থীদের করোনা টিকাদান কর্মসূচী বাস্তবায়নের মত জাতীয় কার্যক্রমে সেসিপের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। নতুন শিক্ষাক্রমের উপযোগিতা যাচাইয়ের পাইলটিং কার্যক্রমসহ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

তারা জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেসিপের ১ হাজার ৪৩৯টি পদ জনবলসহ রাজস্বখাতে স্থানান্তরে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ জুন অনুমোদন দিয়েছেন। সে অনুশাসন বাস্তবায়নে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মোট ১ হাজার ১৮৭টি পদ জনবলসহ রাজস্বখাতে স্থানান্তরে সম্মতি জ্ঞাপন করে। অর্থ বিভাগ ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ৩ ফেব্রুয়ারি ওই ১ হাজার ১৮৭টি পদ জনবলসহ রাজস্বখাতে স্থানান্তরের সম্মতি না দিয়ে করে জনবল ব্যতীত শুধমাত্র মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অর্গানোগ্রামের ৮০১টি পদ সৃজনের সম্মতি দেয়। সে বছরের ২০ জুন ১ হাজার ১৮৭ টি পদ জনবলসহ রাজস্বখাতে স্থানান্তরের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ পুনরায় অর্থ বিভাগে প্রস্তাব পাঠায়। তবে সে বছরের ২৮ জুন অর্থ বিভাগ ফের অসম্মতি জানায়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
১৮তম প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ - dainik shiksha ১৮তম প্রিলির ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫ হাজার ৪৫৬ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, উত্তীর্ণ ৫ হাজার ৪৫৬ সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন - dainik shiksha সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন শতভাগ ফেল স্কুল-মাদরাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ - dainik shiksha শতভাগ ফেল স্কুল-মাদরাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থার উদ্যোগ দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত শিক্ষা কর্মকর্তা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শ্রীপুরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা বাতিল - dainik shiksha শ্রীপুরে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রার্থিতা বাতিল এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বিএনপি-জামায়াত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয় : প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha বিএনপি-জামায়াত মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেয় : প্রধানমন্ত্রী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038940906524658