চার দাবিতে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, বিশেষ পরীক্ষার আশ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক |

অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার গণহারে ফেল করানোর অভিযোগে ফের আন্দোলনে নেমেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। ফেল করা শিক্ষার্থীরা বিশেষ পরীক্ষা নেওয়াসহ চার দফা দাবিতে রোববার (২৯ আগস্ট) বেলা ১১টা থেকে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি শুরু করেন। তাদের অবস্থান কর্মসূচির কারণে আজিমপুর-মিরপুর সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।

বিকেল ৩টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করার পর বিশেষ পরীক্ষার আশ্বাসে নীলক্ষেত ছেড়ে যান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুই দিনের মধ্যে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা না করলে আবারও আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, গত কয়েক মাসে সাত কলেজের আট থেকে নয়টি বিভাগের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সেই ফলাফলে দেখা গেছে ‘বিপর্যয়’। এর মধ্যে ইংরেজি বিভাগে সাতটি কলেজেই গণহারে ‘ফেল করিয়ে দেওয়া হয়েছে’ বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। তিতুমীর কলেজের ২৪১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৯৩ জন ফেল, ইডেন মহিলা কলেজের ২১০ জনের মধ্যে ১৭৫ জন ফেল, সরকারি বাংলা কলেজের ১১৬ জনের মধ্যে ৯২ জন ফেল, বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের ৪৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩০ জন ফেল করেছেন। অন্যান্য বিভাগের ফলও ভালো নয়।

সকালে সড়কে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থী চার দফা দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, অনার্স চতুর্থ বর্ষের অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের খাতা সঠিক ভাবে পুনঃমূল্যায়ন করতে হবে অথবা শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ দিনের মধ্যে বিশেষ পরীক্ষার নোটিশ দিতে হবে, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্তৃক ক্লাস যাচাই করতে হবে, শিক্ষার্থীদের যে কোন ধরনের একাডেমিক সমস্যা নিজ কলেজের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে এবং সকল বিভাগের ফলাফল একত্রে প্রকাশ ও বিভিন্ন বিভাগের আটকে থাকা পরীক্ষার ফল আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। অবিলম্বে এসব দাবি না মানা হলে আমরণ অনশনে বসার ঘোষণাও দেন শিক্ষার্থীরা। 

ছবি : দৈনিক শিক্ষা

কর্মসূচি চলার মধ্যে আন্দোলনকারীদের পাঁচজনের একটি প্রতিনিধি দল দুপুরে সাত কলেজের সমন্বয়ক ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। অধ্যক্ষ বিশেষ পরীক্ষা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করে। 

ছবি : দৈনিক শিক্ষা

প্রতিনিধি দলের সদস্য সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, স্যার বিশেষ পরীক্ষার ব্যাপারে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বিভাগীয় চেয়্যারম্যান স্যারদের সাথে আলোচনা করে পরীক্ষার তারিখ জানানোর কথা বলেছেন। আমরা এজন্য দুই দিনের সময় দিয়েছি। তার আশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছি। দুইদিন পর ইতিবাচক সিদ্ধান্ত পাওয়া না গেলে আমরা আবারও আন্দোলনে ফিরব।

ছবি : দৈনিক শিক্ষা

জানতে চাইলে অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পাঁচজন প্রতিনিধি আমার সঙ্গে দেখা করেছে। আমি তাদেরকে বলেছি, তারা যাতে তাদের বিভাগীয় চেয়ারম্যান বা অধ্যক্ষদের মাধ্যমে ফেলের সঠিক চিত্র নিয়ে আসে। জেনারেল চিত্র দিয়ে তো কোনো কিছু করা যাবে না। সঠিক চিত্রটা পেলে  আমরা ঢাকা ইউনিভার্সিটিকে বিষয়টা বলতে পারব।

ছবি : দৈনিক শিক্ষা

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা বিশেষ পরীক্ষার দাবি জানিয়েছে। এটাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। বিশেষ পরীক্ষা তো অবশ্যই নিতে হবে, সেটা আমাদের বিবেচনায় আছে। তবে কোনো সময় বেঁধে দিয়ে নয়, একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আমরা তাদের পরীক্ষা নেবো।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! শিক্ষককে পিটিয়ে হ*ত্যা, চাচাতো ভাইসহ গ্রেফতার ৩ - dainik shiksha শিক্ষককে পিটিয়ে হ*ত্যা, চাচাতো ভাইসহ গ্রেফতার ৩ কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0046660900115967