চালের বস্তায় জাত, দাম উৎপাদনের তারিখ লিখতেই হবে

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক : চালের অবৈধ মজুত রোধে নির্ধারিত সময়ে আইন বাস্তবায়নে অনড় সরকার। চালের বস্তায় ধানের জাত, উৎপাদনের তারিখ, মিলগেটের মূল্য লেখা বাস্তবায়নের নির্ধারিত সময় পেছানোর জন্য চালকল মালিক সমিতির আবেদন নাকচ করে দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে খাদ্যমন্ত্রী ও খাদ্য সচিব বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পহেলা বৈশাখ থেকেই এটি কার্যকরের। এখন থেকে প্রতিটি বস্তার গায়ে ধানের জাত, উৎপাদনের তারিখ, প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের নাম, নিট ওজন, মিলগেট মূল্য লিখতে হবে।   

এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, চালকল মালিক সমিতির এই আবেদন বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। একদিনও পেছানোর সুযোগ নেই। তিনি বলেন, চালকল মালিকরা ইতোমধ্যে বস্তার গায়ে ধানের জাত, উৎপাদনের তারিখ, প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের নাম, নিট ওজন, মিলগেট মূল্য লেখা শুরু করেছে।

পহেলা বৈশাখ থেকে বস্তার গায়ে ধানের জাত, উৎপাদনের তারিখ, প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের নাম, নিট ওজন, মিলগেট মূল্য লেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

কিন্তু  চালকল মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এটি বাস্তবায়নের নির্ধারিত সময় তিন মাস পেছানোর দাবি জানিয়েছিল সরকারের কাছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ে খাদ্যমন্ত্রী, সচিব বৈঠকে বসেন। বৈঠকে চালকল মালিকদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,  বাজারে এখনো মূল্য, জাত না লেখা আগের বস্তায় চাল দেখা যাচ্ছে। পহেলা বৈশাখ থেকে বস্তার গায়ে ধানের জাত, উৎপাদন খরচ ও মিলগেটের চালের মূল্য লেখা বাধ্যতামূলক করা হলেও অনেক ব্যবসায়ী তা বাস্তবায়ন করছেন না। 

এ বিষয়ে খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, চাল ব্যবসায়ীদের শৃঙ্খলায় আনতে আইনটি করা হয়েছে। সকলকে অবহিতও করা হয়েছে। এখন যে চালগুলো মিল থেকে বের হচ্ছে তার অধিকাংশ ক্ষেত্রে বস্তার গায়ে জাতের নাম, উৎপাদন খরচ, মিলগেটের মূল্য লেখা থাকছে। আগে থেকে যেগুলো বাজারে এসেছে তা শেষ হতে এক-দুই মাস লেগে যাবে। কোনো কোনো মিলে  পুরনো বস্তা রয়ে গেছে। এগুলো নিষ্পত্তি হওয়ার পর পুরোদমে এটি বাস্তবায়ন হবে। 

অবৈধ মজুত রোধে সরকার ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) বিল-২০২৩’ আইন পাস করেছে। এতে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন করাদ-ের বিধান রয়েছে। এতে বলা আছে, নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে বেশি খাদ্যদ্রব্য কেউ মজুত করলে তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এই অপরাধের শাস্তি যাবজ্জীবন বা সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদ- এবং অর্থদ- হতে পারে।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনটি পাস করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ কার্যকর হলে খাদ্যদ্রব্য মজুতের সুযোগ থাকবে না। বরং খাদ্য ও খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। ফলে সাধারণ মানুষ অনেক বেশি লাভবান হবে। 

আইনে বলা হয়েছে, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণে সারাদেশে প্রয়োজনীয়সংখ্যক আদালত থাকবে। এই আদালত খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত নামে অভিহিত হবে। এই আইনের অধীনে কিছু অপরাধের বিচার মোবাইল কোর্টেও করা যাবে। খাদ্যদ্রব্য বলতে যে কোনো প্রকার দানাদার খাদ্যদ্রব্য যথা- চাল, ধান, গম, আটা, ভুট্টা ইত্যাদিকে বুঝানো হয়েছে বলে বিলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, সরকার নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে বেশি খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে বা মজুত সংক্রান্ত সরকারের কোনো নির্দেশনা অমান্য করলে তা হবে অপরাধ। এর শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদ- বা সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদ- এবং অর্থদ-। তবে এইরূপ অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে, তিনি আর্থিক বা অন্য কোনো প্রকার লাভের উদ্দেশ্য ব্যতীত মজুত করেছিলেন তাহলে তিনি অনূর্ধ্ব ৩ মাস কারাদ- এবং অর্থদ-ে দ-িত হবেন। এই অপরাধ হবে অজামিনযোগ্য।

আইনে আরও বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি পুরনো খাদ্যদ্রব্য পলিশিং বা অন্য কোনো খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মিশ্রণ করে বা সরকার কর্তৃক খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহকালে সরকারি গুদামে রক্ষিত খাদ্যদ্রব্য বৈধ বা অবৈধভাবে সংগ্রহ করে, দেশে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে আমদানিকৃত খাদ্যদ্রব্য; বা সরকারি গুদামের পুরনো বা বিতরণকৃত সিল বা বিতরণ করা হয়েছে, এমন চিহ্নযুক্ত খাদ্যদ্রব্য ভর্তি বস্তা বা ব্যাগ বা আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণগত বা গুণগত পরিবর্তন করে বা অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি গুদামে সরবরাহ করলে তা হবে অপরাধ। এর সাজা হবে সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদ- বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয়দ-।  

আর কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন সম্পর্কিত কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ, প্রচার বা বিতরণ করলে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদ- বা সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয়দ-ে দ-িত হবেন।

এতে বলা হয়েছে, কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে ওই রূপ জাতের উপজাত পণ্য হিসেবে উল্লেখ না করে ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করলে বা খাদ্যদ্রব্যের স্বাভাবিক উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিক পরিবর্তন করে উৎপাদন বা বিপণন করলে সেটি অপরাধ হবে।

সূত্র : জনকণ্ঠ


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই - dainik shiksha একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু ৩০ জুলাই অবসর কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার ফের তাগিদ - dainik shiksha অবসর কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার ফের তাগিদ সুধা রানী হাদিসের শিক্ষক পদে : এনটিআরসিএর ব্যাখ্যা - dainik shiksha সুধা রানী হাদিসের শিক্ষক পদে : এনটিআরসিএর ব্যাখ্যা শরীফ-শরীফার গল্প বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবই থেকে - dainik shiksha শরীফ-শরীফার গল্প বাদ যাচ্ছে পাঠ্যবই থেকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha শূন্যপদের ভুল চাহিদায় শাস্তি পাবেন কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষক এক রুমে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ, পাঠদান বন্ধ - dainik shiksha এক রুমে ৩৫ ছাত্রী অসুস্থ, পাঠদান বন্ধ যৌ*ন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে - dainik shiksha যৌ*ন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক কারাগারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027890205383301