চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর জন্মদিন আজ

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

বিখ্যাত চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর আজ জন্মদিন। তিনি ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে ফেনী জেলায় ক্ষয়িষ্ণু জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পরিবারের এক সদস্য আমীনুল ইসলাম চৌধুরী লিখেছিলেন নোয়াখালীর ইতিহাস। পিতা আবদুল কুদ্দুস চৌধুরী ছিলেন সমবায় বিভাগের পরিদর্শক। পরবর্তীতে তিনি সমবায় ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। নোয়াখালীর গোপাল হালদারের সঙ্গে ছিল তার সখ্য।

 কুমিল্লায় গায়ক মোহাম্মদ হোসেন খসরু এবং লোকগানের সাধক শচীন দেববর্মনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছিলো। চট্টগ্রামের আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদের সঙ্গে তাদের পারিবারিক যোগাযোগ ছিলো । বাবার বদলির চাকরির সুবাদে কাইয়ুম চৌধুরী বাংলার অনেক এলাকায় ঘুরে ফিরেছেন।

মক্তবে কাইয়ুম চৌধুরীর শিক্ষার হাতেখড়ি, তারপর ভর্তি হন চট্টগ্রামের নর্মাল স্কুলে। এরপর কিছুকাল কুমিল্লায় কাটিয়ে চলে যান নড়াইলে। চিত্রা পাড়ের এই শহরে কাটে তার তিনটি বছর। সেখান থেকে সন্দ্বীপ এসে ভর্তি হন প্রথমে সন্দ্বীপ হাই স্কুল ও পরে কারগিল হাই স্কুলে। এরপর নোয়াখালী জেলা সদরে কিছুকাল কাটিয়ে পিতার সঙ্গে তার ঠাঁই বদল হয় ফেনীতে। ভর্তি হলেন ফেনী হাই স্কুলে, সেখান থেকে যান ফরিদপুরে। ফরিদপুর থেকে ময়মনসিংহ এসে ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে সিটি কলেজিয়েট স্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন। স্কুল জীবন থেকে আঁকাআঁকির প্রতি ঝোঁক দেখা গিয়েছিল কাইয়ুম চৌধুরীর। ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে আর্ট ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়ে কাইয়ুম চৌধুরী কৃতিত্বের সঙ্গে শিক্ষা সমাপন করেন ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে। তিনি শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনকে। সদ্য-প্রতিষ্ঠিত আর্টস ইনস্টিটিউটের নবীন শিক্ষার্থীরা ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ভাষা আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ইমদাদ হোসেন, মুর্তজা বশীর, আমিনুল ইসলাম, দেবদাস চক্রবর্তী প্রমুখ ছিলেন প্রতিবাদী আয়োজনের নিরলস কর্মী এবং সকল মিছিলের পুরোভাগে। অন্তর্মুখী স্বভাবের কাইয়ুম চৌধুরীরও  এতে সম্পৃক্ত ছিলেন।

১৯৫৫ থেকে ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত কাইয়ুম চৌধুরী নানা ধরনের ব্যবহারিক কাজ করেছেন, বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন, আর বইয়ের প্রচ্ছদ ও সচিত্রকরণের কাজ করেছেন । সিগনেটের বই কাইয়ুম চৌধুরীর জন্য ছিলো এক অনুপম নির্দশন। সাময়িক পত্রিকা বিষয়ে আগ্রহী কাইয়ুম চৌধুরী, ছায়াছবি নামে একটি চলচ্চিত্র সাময়িকী যুগ্মভাবে সম্পাদনা করেছিলেন কিছুকাল। সুযোগমতো টুকটাক প্রচ্ছদ আঁকছিলেন এবং এই কাজের সূত্রেই পরিচয় সৈয়দ শামসুল হকের সঙ্গে।

তিনি ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদক লাভ করেন। শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে সুফিয়া কামাল পদক লাভ করেন । ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে শহীদ আলতাফ মাহমুদ পদকে ভূষিত হন। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ - dainik shiksha জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর - dainik shiksha বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা - dainik shiksha হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল - dainik shiksha পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030519962310791