চিফ ইঞ্জিনিয়ার পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে মরিয়া শিক্ষা প্রকৌশল সিন্ডিকেট

নিজস্ব প্রতিবেদক |

এবার অবসরে পাঠানোর আদেশ জারির পর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বুলবুল আখতারকে তড়িঘড়ি করে প্রধান প্রকৌশলীর পদে পদোন্নতি দেয়া এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের তোড়জোড় চালাচ্ছে শিক্ষা প্রশাসনের একটি চক্র। বুলবুল আখতার বর্তমানে প্রধান প্রকৌশলীর চলতি দায়িত্বে আছেন। একটি খসড়া বিধিমালার আলোকে বিতর্কিত এ প্রকৌশলীকে পােন্নতি দেয়া এবং তার চাকরির মেয়াদ দুই বছর বৃদ্ধির প্রস্তাব সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) সভায় তোলা হবে বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
 
ওই প্রকৌশলীকে ২০ নভেম্বর থেকে অবসর ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে। বুলবুল আখতারকে অবসরোত্তর ছুটিতে পাঠানোর আদেশ জারি হয় গত ৫ নভেম্বর। তাকে পদোন্নতি পাইয়ে দেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন বিতর্কিত একজন ঠিকাদার, যার কব্জায় শিক্ষায় অবকাঠামো নির্মাণের সবচেয়ে বেশি কাজ রয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষা প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে; আওয়ামীলীগপন্থী প্রকৌশলীদের মধ্যেও তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।


 
ইইডি’র শীর্ষ কর্মকর্তার প্রশাসনিক অদক্ষতা, গাফিলতি ও ুর্নীতির কারণেুই শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ গত এক-দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রস্তাব পাঠানো ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ভোলা সরকারি কলেজে নিম্নমানের চারতলা ভবন নির্মাণের দুর্নীতি ধামাপাচা দেয়ার চেষ্টাসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। গত ২৮ আগস্ট শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর কর্মকর্তা কর্মচারী পরিষদের ব্যানারে জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে সচিব বরাবর অভিযোগ করা হয়েছিল; যাতে বলা হয়, শীর্ষ কর্মকর্তার ভাই শাহাদাত হোসেন মানিক ১৯৯৪ সালে রাজশাহী সিটি কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের বাইতুলমাল সম্পাদক ছিলেন। 

এদিকে ভোলা সরকারি কলেজে নিম্নমানের চারতলা একাডেমিক কাম প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য ইইডি প্রধান প্রকৌশলীকে (চলতি দায়িত্ব) চতুর্থ দফায় লিখিত পত্র দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক (পিডি)। তবে এই ঘটনা ধামাচাপা দেয়া এবং বিভাগীয় মামলার নথিপত্র গোপন রেখে অভিযুক্ত প্রকৌশলীকে পদোন্নতি প্রদানে সহযোগিতার দায়ে ফেঁসে যেতে পারেন চলতিায়িত্বের ওই প্রধান প্রকৌশলীও।
 
শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে জেলা সদরে অব¯ি’ত সরকারি পোস্টা গ্রাজুয়েট কলেজসমূহের উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি তাহিয়াত হোসেন (অতিরিক্ত সচিব) সর্বশেষ গত ৫ নভেম্বর ইইডির প্রধান প্রকৌশলীর কাছে এই চিঠি দেন।
‘প্রকল্পভুক্ত ভোলা সরকারি, ভোলা এর একাডেমিক হল ভবনের উধ্বুমর্খী সম্প্রসারণের সময় দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গ’ শীর্ষক চিঠিতে বলা হয়, ‘মাধ্যমিক ও উ”চ শিকষা অধিদপ্তরাধীন (মাউশি) প্রকল্পের ২য় সংশোধিত ডিপিপিতে ভোলা সরকারি কলেজ, ভোলায় ৫ম তলা ভিতের ওপর নির্মিত তৃতীয় তলা বিশিষ্ট একাডেমিক কাম এক্সামিনেশন হল ভবনকে ৫ম তলা পর্যন্ত উধ্বমুর্খী সম্প্রসারণ করার সংস্থান রয়েছে। কিন্তু‘ প্রকল্প পরিচালক ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জানুয়ারি ভোলা সরকারি কলেজ সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখতে পান যে, কলেজের একাডেমিক কাম এক্সামিনেশন হল ভবনটির ৫ম তলা পর্যন্ত উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের  কথা থাকলেও তা ৪র্থ তলা পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়েছে। বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী, ভোলা জোন প্রকল্প পরিচালককে জানান একাডেমিক কাম এক্সামিনেশন হল ভবনটির ৫ম তলা পর্যন্ত উর্ধ্বুমুখী খুব ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এর ৫ম তলার উর্ধ্বুমুখী সম্প্রসারণ করা সম্ভব নয়।’
 
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘এ বিষয়ে কারণ জানতে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৬ ফেব্রুয়ারি ও ২৭ ফেব্রুয়ারি এবং গত ১৯ অক্টোবর প্রকল্প কার্যালয় হতে পরপর তিনটি পত্র প্রেরণ করা হলেও আজ অবদি কোন জবাব পাওয়া যায়নি। এমতাবস্থায়, ভোলা সরকারি কলেজ, ভোলায় প্রকল্পের আওতায় নির্মিত একাডেমিক কাম এক্সামিনেশন হলের উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী, সহকারী প্রকৌশলী এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’ এই চিঠির কপি মাধ্যমিক ও উ”চ শিক্ষা বিভাগের সচিব এবং মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছেও দেয়া হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043849945068359