কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল দক্ষিণ পাড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে মাদরাসার সভাপতি শরিফুল আলম চৌধুরী বাদি হয়ে কুমিল্লার ৮নং আমলি আদলতে এই মামলা দায়ের করেন।
আদালতে ম্যাজিস্ট্রেট ইরফানুল হক চৌধুরী কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা বিভাগ ডিবির ওসিকে মামলার তদন্তের নির্দেশ দেন। বাদী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন কুমিল্লা আইনজীবি সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক এডভোকেট গোলাম মোস্তফা ও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ তানভীর আহম্মেদ ফয়সাল।
অভিযুক্ত মাদরাসা সুপার মোস্তাফিজুর রহমান উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়নের নবীয়াবাদ গ্রামের মৃত রুউফ মিয়ার ছেলে। মামলার সূত্রে জানা যায়, উন্নয়ন তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ, নিয়মিত মাদরাসায় না এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিক বিষয় নিয়ে অভিযোগ করেন স্থানীয় অভিভাবক ও শিক্ষক কর্মচারীরা। তার অনিয়ম ও দূর্নীতি নিয়ে শিক্ষক কর্মচারীরা লিখিত অভিযোগ করে ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে। তাদেরকে যখন সুপার পরোয়া করেনা তখন তারা নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন। পরে গত ১২ অক্টোবর দুপুরে প্রতিষ্ঠানের মূল কাগজ পত্র ও টাকা পয়সাসহ সুপার পালিয়ে যায়। পর দিন সুপারের বিরুদ্ধে মুরাদনগর থানার একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়। ১৯ অক্টোবর মাদরাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় সুপার মোস্তাফিজুর রহমান প্রতিষ্ঠানের গুরত্বপূর্ন কাগজপত্র, নগদ অর্থ নিয়ে পলাতক থাকাসহ, বিভিন্ন অনিয়ম ও অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হওয়ায়, সভায় মাদরাসার কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সহ-সুপার আবদুল হাফিজকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মাদরাসা শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, ব্যবস্থাপনা কমিটির অভিযোগ করেও কোন সমাধান না হওয়ায় নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ দায়ের করি।
মাদরাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শরিফুল আলম চৌধুরী বলেন, সুপার সাহেব দীর্ঘদিন যাবত উন্নয়ন তহবিলের সঠিক হিসাব দিতে পারেনি। তাছাড়া তিনি সপ্তাহে দুইদিন মাদরাসায় এসে বাকী চার দিনের স্বাক্ষর করে থাকেন। শুধু তাই নয়, তার শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে তিনি অসদাচরণ করেন। ব্যবস্থাপনা কমিটি একাধিক সভায় তাকে মৌখিক ভাবে নিজেকে শোধরানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছিলো। কিন্তু তিনি অনিয়মের মাত্রা বাড়িয়ে দেন। এরপর তাকে শোকজ করা হয়। শোকজের জবাব না দিয়ে উল্টো মাদরাসার গুরত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও টাকা নিয়ে গত ২২ দিন যাবত উধাও। তার সেলফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই মুরাদনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করি এবং মাদরাসার কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সহ-সুপার আবদুল হাফিজকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২২ দিনে সুপার আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি এবং আমরাও যোগাযোগ করে তাকে পাইনি বিধায় তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
অভিযুক্ত সুপার মোস্তাফিজুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিধি মোতাবেক টাকা ও কাগজপত্র আমি সাথে এনেছি। অসুস্থ্য তাই মাদরাসায় যাইনা।
কতৃপক্ষকে অবহিত করেছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বিষয়টি পাশ কাটিয়ে বলেন, আমার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ মিথ্যা।