ছাত্রলীগকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ঢাবি সাংবাদিক সমিতির

ঢাবি প্রতিনিধি |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলে তিন সাংবাদিককে আটকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদও জানিয়েছে সাংবাদিক সমিতি। 

রোববার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণে ছাত্রলীগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অন্যথায় সারাদেশের ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের নিয়ে কঠোর কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে বিবৃতিতে। 

হামলার শিকার সাংবাদিক তিনজন হলেন- দৈনিক জনকন্ঠের ঢাবি প্রতিনিধি মুনতাসির জিহাদ, কালের কন্ঠের ঢাবি প্রতিনিধি মেহেদী হাসান ও সারা বাংলার ঢাবি প্রতিনিধি কবির কানন।

অভিযুক্তরা হলেন- হল শাখার উপ-দপ্তর সম্পাদক আসিফ রায়হান মিনার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এসএম মাহমুদ সেতু, যুগ্ম-সম্পাদক নাফিউল আলম ফুজি, প্রচার সম্পাদক নিলাদ্রি নিলয় দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজিদ মাহমুদ অয়ন, সহ-সভাপতি সন্টুর রহমান প্রমুখ।

এরা সবাই ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। এদের সাথে আরও ছিলেন- মেকানিক্যাল বিভাগের অর্ণব চক্রবর্তী সৌমিক, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের রাউফুন রাজন ঝলক, মেকানিক্যাল বিভাগের মিনহাজুল ইসলাম, নেভাল আর্কিটেকচার বিভাগের নিলাদ্রী নিলয় দাস, নেভাল আর্কিটেকচার বিভাগের মেহেদী হাসান, তড়িত কৌশল ফারহান জাওয়াদ।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে আটকে রাখা হয়েছে এমন খবর পেয়ে তারা তিনজন সেখানে যান। হলে প্রবেশ করতে গেলে গেটটি তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান।

এসময় ভিতরে ঢুকতে চাইলে হলের দায়িত্বরত নিরাপত্তা প্রহরী জানান, ভিতরে ঢুকতে ছাত্রলীগের নিষেধ আছে। পরে হলের নিরাপত্তা প্রহরীকে পরিচয় দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করেন তারা।

এর পরের ঘটনার বর্ণনায় ভুক্তভোগীরা জানান, হলটিতে প্রবেশ করার পাঁচ মিনিটের মধ্যে শেরে বাংলা হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন এবং হলের ভিতরে প্রবেশের কারণ জানতে চান।

এসময় শিক্ষার্থী অপহরণের খবরের বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের মারধর করেন। তাদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন, পত্রিকার পরিচয়পত্র ও মানি ব্যাগ কেড়ে নেন। সেখান থেকে তাদের নেওয়া হয় হলের ক্রীড়া কক্ষে। প্রায় ৩০ মিনিট কক্ষটিতে আটকে রেখে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়।

ঘটনাটি জানাজানি হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি ও ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

মারধরের বিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক মেহেদী হাসান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ধরে নিয়ে গেছে এমন তথ্য পেয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলাম। কারণ ঘটনাটির বিষয়ে একেকজন একেক রকম তথ্য দিচ্ছিল। হলের ভেতর প্রবেশ করার পরে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে মারধর করে।

সমিতির সভাপতি আসিফ ত্বাসীন ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নয়ন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, গত এক মাসে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। অথচ একটি ঘটনাতেও ছাত্রলীগ জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। অনেক ক্ষেত্রে দায়সারা দুঃখ প্রকাশ করেই তারা ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি প্রদান থেকে বিরত থেকেছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023670196533203