আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের ১৮টি হলের সম্মেলন। ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতাদের দাবি, এ সম্মেলনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ক্লিন ইমেজধারী এবং ঢাবির নিয়মিত ছাত্ররাই নেতৃত্বে আসবে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত ও নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে এসব পদপ্রত্যাশীদের অনেকের বিরুদ্ধেই। বিতর্কিত প্রার্থীরা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসলে সব মহলে ছাত্রলীগ প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে মনে করেন ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক একাধিক নেতা। পদপ্রাথীদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধেই সাংবাদিক মারধর, হত্যা চেষ্টার মামলার আসামি, গোপনে ছাত্রদলের সঙ্গে যোগাযোগ, চাঁদাবাজি, হলের ক্যান্টিনে ফাও খাওয়া এবং ছাত্রত্ব শেষ হওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু হলগুলোতে পদ পেতে তাদেরই দৌড়ঝাঁপ বেশি দেখা
বিতর্কিতদের মধ্যে রয়েছেন সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের পদপ্রত্যাশী মেহেদী হাসান তাপস, মিজানুর রহমান পিকুল, রাকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য ও আসিফ উদ্দিন আহমেদ। ২০১৩ সালের ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্যের সামনে চাঁদাবাজি করতে গেলে বাধা দেয় সাংবাদিকরা। এ সময় পাঁচ সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় ২১ জনকে চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চিহ্নিতদের মধ্যে ১১ জনকে বহিষ্কার করে শাখা ছাত্রলীগ। তাদের মধ্যে এরাও ছিলেন। এছাড়া হলে ফাও খাওয়া ও বিভিন্ন চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে এদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের পদপ্রত্যাশী সোহানুর রহমান সোহান। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসানের অনুসারী এই প্রার্থীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক সাগর হোসাইন সোহাগকে নীলক্ষেতে মারধর করে সোহান ও সূর্যসেন হলের মো. গোলাম সরওয়ারের নেতৃত্বে কয়েকজন কর্মী। এ ঘটনায় সোহাগ বাদী হয়ে ৯ জানুয়ারি নিউমার্কেট থানায় হত্যাচেষ্টা ধারায় মামলা করে। মামলায় দুইজনকে আসামি করা হয়। এক নম্বর আসামি সোহান ও অপরজন মো. গোলাম সরওয়ার। মামলা নং-৩। এছাড়া ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পূর্বে সোহান ছাত্রদল নেতা নুরুল ইসলাম নয়নের সঙ্গে তাদের অভ্যন্তরীণ কর্মসূচিগুলোতে অংশ নিতো বলে অভিযোগ আছে। আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। মামলার নিবন্ধন নং-২৭২। অভিযোগপত্র নং-৩৩৮। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের অনুসারী বুলবুল হলের অন্যতম পদপ্রত্যাশী।
স্যার এ এফ রহমান হলে সাইফুর রহমান সোহাগের প্রার্থী হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে উদ্যানে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের সময় নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে শেখ নাজমুল আহমেদ ও মো. শাহরিয়ার। পরে সরকার গঠন হলে তারা হলের বর্ধিত কমিটিতে পদ নেয়। হলের পদ প্রত্যাশী সাইফুল ইসলাম সজীব, শাহ আবদুল বাশার শুভ ও ইসমাইল হোসেনের কোন পদ নেই। এরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনের অনুসারী।
অমর একুশে হলের পদপ্রত্যাশী তাসফিক আহমেদ লিমন সাইফুর রহমান সোহাগের অনুসারী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সের অনুসারী তানজির হোসাইন। এই দুই প্রার্থীর ছাত্রত্ব নেই বলে জানা গেছে। বঙ্গবন্ধু হলের পদপ্রত্যাশী মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে ঐ হলেই ছাত্রদলের কর্মী রাখার অভিযোগ করেছেন ছাত্রলীগের একাধিক সিনিয়র পর্যায়ের নেতারা।
হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনের অনুসারী হোসাইন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের পূর্বে ছাত্রলীগের কোন পদ নেই। শহীদুল্লাহ হলে জাকির হোসাইনের অনুসারীদের দুই জনের বিরুদ্ধে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করে ভর্তি করানো এবং হলে ছাত্রদল রাখার অভিযোগ রয়েছে।