কুড়িগ্রামে চর রাজীবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাইরুল ইসলামের ইয়াবা সেবনের একটি ভিডিও গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি দরজা বন্ধ ঘরে বিছানায় বসে অভিযুক্ত খাইরুল তার সহযোগীদের নিয়ে ভয়ংকর মাদক ইয়াবা সেবন করছেন। এ ঘটনায় হতভম্ব হয়ে পড়েছে উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী-সমর্থকরা।
যদিও ওই ছাত্রলীগ নেতার দাবি, ভিডিও যাকে দেখা যাচ্ছে তিনি ওই ব্যাক্তি নন। ভিডিওটি এডিট করা বলে দাবি করেছেন তিনি।
এর আগেও অভিযুক্ত সভাপতি খাইরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে টাকা বিনিময়ে কমিটি বাণিজ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছিলো। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার হয়েছিলো।
চর রাজিবপুর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আর সেখানে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতির এ ঘটনা মেনে নেয়ার মতো না। সভাপতির সাংগঠনিক বিচার হওয়ার দাবি জানাই।
চর রাজিবপুরের বাসিন্দা বিদ্যুৎ সরকার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, একজন ব্যক্তির জন্য ছাত্রলীগের মতো ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের সুনাম নষ্ট হতে পারে না। অবিলম্বে অভিযুক্ত সভাপতির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
চর রাজিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই সরকার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ওই ভিডিও আমি দেখেছি। আমি নিশ্চিত ভিডিওর ব্যাক্তি ছাত্রলীগের সভাপতি খাইরুল। আমরা জেলা কমিটিকে বিষয়টি জানিয়েছি।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা গত ১৭ জুন (শনিবার) নিজ ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানান, সাত বছর আগের কথা। আমাকে ডেকে নিয়ে গোপনে ভিডিও ধারণ করে ফাঁসানো হয়েছে। যে ভিডিও ধারণ করেছে সে বিভিন্ন সময় আমাকে এবং আমার পরিবারকে এটা নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করতো। আমি মাদক সেবনকারী কি-না তা প্রমাণ হয়ে যাবে ডোপ টেস্টের মাধ্যমে। যদি প্রমাণ হয় আমি আমার জীবন দিয়ে এর প্রায়শ্চিত্ত করবো। বিষয়টি নিয়ে মাতামাতি না করার জন্য অনুরোধ করছি। ওই পোস্ট করার কিছুক্ষণ পরে তা মুছে ফেলেন খাইরুল। পরবর্তীতে প্রোফাইলে গিয়ে পোস্টটি পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খায়রুল আহমেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে দাবি করেন, ভিডিওতে মাদক সেবনের দৃশ্যে আমার ছবি এডিট করে বসানো হয়েছে। ভিডিওতে যাকে দেখা যাচ্ছে সেটা আমি নই। মাদক সেবনকারীর ছবির সঙ্গে আমার কোনো মিল নেই। আমার নাম ব্যবহার করে ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে যে পোস্ট করা হয়েছে তা আমার নয়। একটি মহল ষড়যন্ত্র করে সমাজে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করছে। আমি জেলা ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা ভিডিওটি পেয়েছি। ভিডিওটির যাচাই-বাছাই চলছে। ভিডিওটি কি সঠিক না এডিট করা সেটি শনাক্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে আমরা এ বিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো।