অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বরিশাল বিএম কলেজের বনমালী গাঙ্গলী ছাত্রী হোস্টেলের ছাত্রলীগ নেত্রী ফারজানা ঝুমুরকে গণধোলাই দিয়েছে সাধারণ ছাত্রীরা। রোববার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুদ্ধ ছাত্রীরা ছাত্রাবাসের সামনের সড়ক অবরোধ করে । পাশাপাশি ঝুমুরের রুমে থাকা আসবাবপত্র মূল সড়কে এনে পুড়ে ফেলে। এসময় বেশ কিছুক্ষণ সড়কে যান চলাচলও বন্ধ ছিল।পরে কোতোয়ালী থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বরিশাল বিএম কলেজের উপাধ্যক্ষ স্বপন কুমার পাল জানান, বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে বলে জানান।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আওলাদ হোসেন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, ছাত্রী হোস্টেলের ছাত্রীদের মধ্যে ঝামেলার কথা শুনে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, ঝুমুর দীর্ঘদিন যাবৎ কলেজের বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রীনিবাসে থাকার পাশাপাশি হলের আবাসিক ছাত্রীদের নানাভাবে হয়রানি ও উত্ত্যক্ত করত। নানা অপকর্মে ছাত্রীদের ডাকত সে। তার ডাকে কেউ অপকর্মে অংশগ্রহণ না করলে মারধর থেকে শুরু করে নানা নির্যাতন করত এই ছাত্রলীগ নেত্রী। এই ঘটনার জেরে হলের আবাসিক ছাত্রীরা জোটবদ্ধ হয়ে বিএম কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর একটি স্মারকলিপিও দেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ছাত্রীনিবাসের আবাসিক ছাত্রী ও ছাত্রলীগ নেত্রী ফারজানা দীর্ঘদিন যাবৎ সাধারণ ছাত্রীদের নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড করার জন্য চাপ প্রয়োগ করত। আর তার কথা না শুনলেই মারধর থেকে শুরু করে নানা অত্যাচার করে থাকে। এছাড়া ঝুমুর ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ছাত্রলীগের নাম বিক্রি করে সে ছাত্রীনিবাসে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
এর মধ্যে সম্প্রতি বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রীনিবাসের ২নং ভবনের ঐশী নামে এক আবাসিক ছাত্রী ঝুমুরের কথা না শোনায় তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় বেধড়ক মারধর করা হয়। পরবর্তীতে ঐশীকে ছাত্রী নিবাস থেকে বের করে দেয়া হয়। ১৯ মার্চ ২নং ভবনের অপর আবাসিক ছাত্রী শারমিনকেও বেধড়ক মারধর করে ঝুমুর। সর্বশেষ ২০ এপ্রিল জান্নাত ও ইভা নামে দুই ছাত্রীকে মারধরের হুমকি দেয় সে।
বনমালী গাঙ্গুলী ছাত্রী নিবাসের ২নং ভবনের আবাসিক ছাত্রী রহিমা আফরোজ ইভা জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ রাজনৈতিক দোহাই দিয়ে ঝুমুর অস্বাভাবিক পথে চলছে। সে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। আর তার কথা মতো কেউ না চললেই তার নির্যাতন করে সে। জান্নাতুল ফেরদৌস নামে আরেক ছাত্রী জানান, ঝুমুরের বিষয়ে একাধিক প্রভাবশালী নেতাদের জানানো হয়েছে। তবে ঝুমুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তারাও ব্যর্থ হয়েছে।
ছাত্রী নিবাস সূত্রে জানা যায়, স্মারকলিপি দেয়ার বিষয়টি ঝুমুর টের পাওয়ায় সে স্মারকলিপি দেয়া ছাত্রীদের চড় থাপ্পর দেয়া শুরু করার এক পর্যায়ে সাধারণ ছাত্রীরা পুনরায় জোটবদ্ধ হয়ে ঝুমুরকে গণধোলাই দেয়।