বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার আটমূল ইউনিয়নের নান্দুরা গ্রামে দশম শ্রেণির মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ প্রতিবাদে জানিয়েছে।
প্রতিবাদে বলা হয়েছে, ঘটনা সূত্রে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার নিহত ছাত্রী স্থানীয় একটি মাদরাসায় পড়ামোনা করত। গত ৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার জুমার সময় মুষলধারে বৃষ্টি চলাকালে একই এলাকার সাইফুল ইসলাম, নুরুন্নবী রঞ্জু ও নাঈম প্রামানিকের সহযোগিতায় মেয়েটিকে একা পেয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে ধর্ষণ করে। মেয়েটি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তার শরীরের ওপর কাপড় ও বস্তা রেখে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। আশপাশের লোকজন তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ডিএইচডিওতে ভর্তি করা হয়। মেয়েটির হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে। গত ৩৩ দিনে ওই মেয়ের শরীরে তিনটি অপারেশন করা হয়েছে। প্রায় দেড় মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৭ অক্টোবর মেয়েটির শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকলে একপর্যায়ে রাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অভিযুক্তদের পরিবারের স্বজনরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নিহতের পরিবারকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে এবং নির্যাতনের শিকার পরিবারের সদস্যরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
আরো পড়ুন : ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা: হাসপাতালে সেই ছাত্রীর মৃত্যু
প্রতিবাদে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় গভীর দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। এলাকার বখাটেদের দৌরাত্ম্যে নারী-কন্যাশিশুরা ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণের পাশাপাশি নির্মম ও নৃশংস সহিংসতার শিকার হচেছ যা তাদের অগ্রযাত্রার পথে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারী ও কন্যারা ঘরে-বাইরে কোথাও নিরাপদ নয়। নির্যাতনের শিকার পরিবারের সদস্যরা অভিযুক্তদের হত্যার হুমকিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারসহ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণের দাবি জানাচ্ছে। সেইসাথে নির্যাতনের শিকার নিহত ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তিরোধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে এবং নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।