ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

জয়পুরহাট প্রতিনিধি |

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কুয়াতপুর জিন্নাতিয়া দাখিল মাদরাসার কম্পিউটার শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর বাবা অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে বুধবার (২৮ নভেম্বর) পাঁচবিবি থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বজলার রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, শিক্ষার্থী নিজেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এনে গত ১২ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিবুল আলম তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঁচবিবি থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই থেকে এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পরে অভিযোগ পেয়ে জয়পুরহাট থেকে সংবাদকর্মীরা যৌন নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এরপর বুধবার অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীর বাবা বাদি হয়ে পাঁচবিবি থানায় মামলা দায়ের করেন। 

শিক্ষার্থীর বাবার অভিযোগ, গত ৫ নভেম্বর মাদ্রাসা ছুটির পর অন্য শিক্ষার্থীদের কৌশলে বাড়ি পাঠিয়ে তার ৬ষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে শিক্ষক আনোয়ার যৌন নির্যাতন করে। বিষয়টি তার মেয়ে তাদের জানিয়েছে। সেই থেকে মেয়েটি মাদ্রাসায় আর যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে অভিযোগ করা হলেও প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। পরে বুধবার তাকে থানায় ডেকে এনে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হয়েছে। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেন।

মাদরাসার সাবেক সভাপতি এনামুল হক বলেন, ‘মাদরাসার ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির একাধিক অভিযোগ থাকলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ এ পর্যন্ত অন্তত ১২ জন শিক্ষার্থী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

তবে মাদরাসার সুপার আব্দুল মান্নান বিষয়টিকে তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের অনৈতিক ঘটনার অভিযোগ সত্য নয়।’

পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিবুল আলম বলেন,’অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত ১২ নভেম্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

অভিযোগের প্রায় দুই সপ্তাহ পর অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া প্রসঙ্গে পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বজলার রহমান বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি সত্য বলে মনে হয়নি। কারণ অভিযোগে উল্লেখ করা তারিখে মাদ্রাসা সরকারি ছুটি ছিল। তাহলে অভিযোগের দুই সপ্তাহ পর মামলা নিলেন কেন- এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে তিনি বলেন, ‘মামলার পর বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’  

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কম্পিউটার শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? - dainik shiksha শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের মানদণ্ড কী? অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ - dainik shiksha অবসর-কল্যাণে শিক্ষার্থীদের দেয়া টাকা জমার কড়া তাগিদ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে - dainik shiksha সুপ্রিম কোর্টের ফতোয়ার রায় পাঠ্যপুস্তকে নিতে হবে সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি - dainik shiksha সরকারি কলেজ মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদিমের চাকরি জাতীয়করণ দাবি শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে কাজ চলছে: শিক্ষামন্ত্রী বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি - dainik shiksha বিএসসি মর্যাদার দাবিতে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মাসব্যাপী কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.010113954544067