রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রীনিবাসে কক্ষে আসন দেওয়া নিয়ে আবারও সাধারণ এক ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের এক নেত্রীর নামে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী তাকে ক্রিকেটের স্টাম্প দিয়ে মেরেছেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাসের ৫০৬ নম্বর রুমে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ছাত্রী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী মহুয়া আক্তার। তাকে মারধরে অভিযুক্ত নেত্রী হলেন- কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রোকসানা আক্তার।
ভুক্তভোগী ছাত্রী মহুয়া বলেন, ‘রোকসানা হলে সিট বাণিজ্য করেন। তিনি বাইরের মেয়েদের টাকার বিনিময়ে হলে রাখেন। তিনি এক রুমে ২০ জন করে মেয়ে রাখেন। টাকা নিয়ে আমাদের হলে তুললেও এখন পর্যন্ত সিট দেননি, বরং আমাদের দিয়ে তার ব্যক্তিগত কাজ করান। তার জুতা পর্যন্ত পরিষ্কার করান। তার কাজ করতে রাজি না হলে তিনি ছাত্রীদের বাজে ভাষায় গালিগালাজ করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তার (রোকসানা) রুমে ক্রিকেট স্টাম্প আছে। কথা না শুনলে তিনি স্টাম্প দিয়ে মারধর করেন। তিনি সবার সঙ্গেই বাজে আচরণ করেন। আমি তার এই খারাপ আচরণের প্রতিবাদ করলে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার রুমে এসে আমাকে স্টাম্প দিয়ে মারেন। এরপর বঁটি নিয়ে আমাকে মারতে এলে আমি চিৎকার করে রুম থেকে বের হয়ে যাই। অন্যরা এগিয়ে এসে আমাকে বাঁচান। পরে শিক্ষকরা এসে আমাকে নিরাপদে সরিয়ে নেন।’
ছাত্রীনিবাসের একাধিক ছাত্রী জানায়, রোকসানাকে এককালীন ৩০ হাজার টাকা দিয়ে একটি কক্ষে ওঠেন মহুয়া। এক বছর ধরে তিনি ওই কক্ষের মেঝেতে থাকেন (ফ্লোরিং)। সম্প্রতি একজনকে ওই কক্ষে আসনের (বেড) ব্যবস্থা করে দেন রোকসানা। মহুয়া এর প্রতিবাদ করলে তাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে রোকসানা মহুয়ার ওপর ক্ষেপে যান। প্রথমে তিনি মহুয়াকে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পেটান। এরপর কক্ষে থাকা বঁটি নিয়ে মহুয়াকে ধাওয়া করেন। তখন কক্ষের বাইরে থাকা অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে মহুয়াকে মারধর করেন রোকসানা। পরে অন্য ছাত্রী ও হল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এদিকে এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা হল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে তারা ভুক্তভোগীর অভিযোগকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেছেন।
এ বিষয়ে বঙ্গমাতা ছাত্রীনিবাসের সুপার নাজমুন নাহার বলেন,‘রোকসানা ও মহুয়া একই কক্ষে থাকেন। গত মঙ্গলবার তাদের দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। আমরা গিয়ে দেখি, দুজনই দুজনকে আঘাত করেছেন। কোনো সিম্পল ব্যাপারে হয়তো এটা হয়েছে। ঘটনার পরে তারা নিজেরাই বিষয়টি সমাধান করেন। এ ঘটনায় কোনো ছাত্রী অভিযোগ দেননি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ নেত্রী রোকসানার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। যোগাযোগ করা যায়নি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার সঙ্গেও।