ছাত্রীদের যৌন নির্যাতন, শিক্ষক বরখাস্ত

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি |

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার মধ্য আঙ্গারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম মাহমুদকে (৫৩) বরখাস্ত করা হয়েছে। স্কুলের ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করছে জেলা শিক্ষা অফিস।

বৃহস্পতিবার সকালে দিনাজপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হোসেন আলী আদেশে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। 

অভিযোগ ও শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের মধ্য আঙ্গারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম মাহমুদ দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে আসছেন।

শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের অজুহাতে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় ছাত্রীদেরকে অশ্লীল ভিডিও দেখিয়ে শ্লীলতাহানি করতেন তিনি। এসব অপকর্মের কথা অভিভাবকদের জানাতে চাইলে বেত্রাঘাত ও পরীক্ষায় ফেল করার হুমকি দিয়ে ছাত্রীদের জিম্মি করে রাখেন। শ্লীলতাহানির ঘটনা ছাত্রীদের মাধ্যমে অভিভাবকরা জানতে পারলে গত ২৩ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষককে মৌখিকভাবে অবহিত করে বিচার দাবি করেন। কিন্তু এতেও কোন সুরাহা না হওয়ায় তারা ২৫ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ দেন অভিভাবকরা। এছাড়াও এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষর নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে স্মারকলিপি দেয়া হয় এবং সংবাদ সম্মেলন করা হয়। গত ২৯ জানুয়ারি উপজেলা শিক্ষা অফিস বিষয়টি তদন্ত করে এবং ১ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুনানি করে অভিযোগের প্রমাণ পান। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ বিধি অনুচ্ছেদ (খ) আওতাভুক্ত অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন। ইতিপূর্বেও এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অনেক অভিযোগ ছিল।

অভিভাবকরা জানান, এই শিক্ষককে শুধু বরখাস্ত নয় তার কঠিনতম শাস্তি দাবি করছি আমরা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোপী চাঁদ রায় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শ্লীলতাহানির বিষয়ে ছাত্রী ও অভিভাবকদের লিখিত অভিযোগ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর তা তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সহকারী শিক্ষক সিরাজুলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এরকম শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তা না হলে পরবর্তীতে ছাত্রীরা নিরাপদে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসতে ভয় পাবে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এরশাদুল হক চৌধুরী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এমন ঘটনা ন্যাক্কারজনক ও দুঃখজনক। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তা তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছিলো। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তা যাচাই-বাছাই করে অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশিদা আক্তার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কোমলমতি বাচ্চাদের যৌন নির্যাতনের মত ঘটনার নিন্দা জানাই। অভিভাবকদের অভিযোগে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ ও গণশুনানি নেয়া হয়েছিলো। তদন্তে ও গণশুনানিতে ঘটনার প্রমাণ পাওয়ায় তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025689601898193