মনিরামপুরে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুই শিক্ষকের নামে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ঝাঁপা বালিকা দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক (কৃষি) তরিকুল ইসলাম ও সহকারী মৌলভী শিক্ষক নজরুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করা হয়। এর আগে বিক্ষুদ্ধ জনতা মাদরাসার সুপার মাওলানা শাহাদাত হোসেনকে ৩ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে ও সহকারী মৌলভী শিক্ষক নজরুল ইসলামকে গণপিটুনির দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুপার শাহাদাতকে উদ্ধার করে।
মাদরাসার সুপার শাহাদাত হোসেন জানায়, মাদরাসার ফলাফল ভালো করতে রাতে মাদরাসায় ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কোচিং ব্যবস্থা চালু করেন। গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এক শিক্ষার্থী কোচিং শেষে বাড়ি না ফেরায় পরিবার তাকে খোঁজাখুজি করে। গভীর রাতে মাদরাসা টয়লেট রুমের পাশে অচেতন অবস্থায় পাওয় যায় ওই ছাত্রীকে। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীরা। প্রাথমিকভাবে ওই শিক্ষার্থীর পরিবার কাউকে বিষয়টি না জানালেও বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী ছাত্র্রী ধর্ষণের বিষয়টি জানায়।
বিষয়টি জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার গ্রামবাসী শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এসময় অভিযুক্ত মৌলভী শিক্ষক নজরুল ইসলাম গণপিটুনির শিকার হন। খবর পেয়ে মনিরামপুর সার্কেল অফিসার রাকিব হাসান, সহকারী (ভূমি) সাইয়েমা হাসান, ওসি (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র মন্ডল ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মৌসুমী আক্তার মাদরাসায় যান। এসময় মাদরাসার সুপার শাহাদাত ও নজরুল ইসলামকে উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের অভিযোগ, সোমবার রাতে কোচিং শেষে মাদরাসার সহকারী শিক্ষক (কৃষি) তরিকুল ইসলাম এবং সহকারী মৌলভী নজরুল ইসলাম ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে ফেলে রাখেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সার্কেল অফিসার রাকিব হাসান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ধর্ষণের ঘটনায় মাদরাসা অবরুদ্ধ রাখার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ শেষে ওই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সোমবারের রাতের ঘটনা জানতে পারি।
মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে দুই শিক্ষককে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শনিবার মাদরাসা খুললে সুপারের কাছে জানতে চাওয়া হবে কার অনুমতিতে রাতে ছাত্রীদের কোচিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরীফি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে মাদরাসা পরিচালনা পরিষদকে ডেকে ঘটনার সাথে জড়িত শিক্ষকদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা বলা হলে সন্ধ্যা নাগাদ অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে আমি জানতে পেরেছি। তবে এ ঘটনায় তাদেরকে আটক করা যায়নি।