নার্সিংয়ের প্রশ্নফাঁসছাপাখানা থেকে হাতে প্রশ্ন লিখে নেন প্রশিক্ষক ফরিদা

দৈনিকশিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিকশিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: প্রশ্নপত্র ছাপাখানায় কাজ করতেন রাজধানী মহাখালীর একটি নার্সিং কলেজের প্রশিক্ষক মোছা. ফরিদা খাতুন। এ সুযোগে আনোয়ার খান নার্সিং কলেজের প্রথম বর্ষের বিএসসি ইন নার্সিং ফাইনাল পরীক্ষার প্রশ্নপত্র থেকে ১৪টি প্রশ্ন হাতে লিখে নেন। ফাঁস হওয়া প্রশ্নের মধ্যে হুবহু ৯টি পরীক্ষায় আসে। আদালতে জমা দেওয়া রাজধানীর ধানমন্ডি থানার এক মামলার চার্জশিটে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্ত শেষে ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে ডিবি পুলিশ।

চার্জশিটে বলা হয়েছে, আসামিদের মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নপত্র আদান-প্রদানের প্রমাণ পাওয়া যায়। আসামি ফরিদা ও নার্গিস পরস্পর যোগসাজশে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করেন। ফরিদার হাতে লেখা ১৪টি প্রশ্ন আসামি ইসমাইলের কাছে সরবরাহ করেন কহিনূর।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবি সাইবার বিভাগের উপপরিদর্শক মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, তদন্তে ছয়জনের বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তারা পদোন্নতির লোভে বিভিন্ন ডিভাইসের মাধ্যমে প্রশ্ন সরবরাহ করেন। ২২ জনকে সাক্ষী করে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন চক্রের মূলহোতা প্রশিক্ষক ফরিদা খাতুন, প্রশিক্ষক মোছা. মনোয়ারা খাতুন, প্রশিক্ষক মোছা. নার্গিস পারভীন, অধ্যক্ষ মোছা. কোহিনূর বেগম, নার্সিং কলেজের স্টাফ মো. ইসমাইল হোসেন ও শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম।

২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২০ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত নার্সিং কলেজের প্রথম বর্ষ ফাইনাল বিএসসি ইন নার্সিং (পোস্ট বেসিক) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরীক্ষা শুরুর আগেই আদান-প্রদান করার প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীদের মুঠোফোনে প্রশ্নপত্রের ছবি ও সাদা কাগজে হাতে লেখা প্রশ্নপত্রের ছবি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরদিন ২২ আগস্ট রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় ফাঁস করা প্রশ্নপত্রের কপি এবং ৯টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পরেরদিন তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফ কোয়ার্টারের মো. শাহেদ মিয়া বাদী হয়ে পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে মামলা করেন। মামলায় ওইদিন তাদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তারা জামিনে কারামুক্ত হন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ফিরোজুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, প্রশ্নফাঁসে আসামিরা জড়িত না। মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করা হবে। তবে আদালত যদি মনে করেন, সাক্ষ্য গ্রহণের মাধ্যমে মামলাটি নিষ্পত্তি করা হবে; সেক্ষেত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করবেন।

আদালতের ধানমন্ডি থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মাহফুজ বলেন, চার্জশিটভুক্ত আসামিরা জামিনে রয়েছেন। মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি বদলির অপেক্ষায় রয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
বাকী সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ একসঙ্গে : শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha বাকী সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ একসঙ্গে : শিক্ষা উপদেষ্টা আমি আশ্বাস দিচ্ছি, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha আমি আশ্বাস দিচ্ছি, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন : এহছানুল হক মিলন - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন : এহছানুল হক মিলন পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন ৪৯ হিন্দু শিক্ষক - dainik shiksha পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন ৪৯ হিন্দু শিক্ষক শিক্ষাগুরুর মর্যাদা কবিতাটি পাঠ্যবই থেকে বাদ দিয়েছিলেন কামাল চৌধুরী - dainik shiksha শিক্ষাগুরুর মর্যাদা কবিতাটি পাঠ্যবই থেকে বাদ দিয়েছিলেন কামাল চৌধুরী কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0052049160003662