আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৪৭ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ নবীনগর আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি বীর মুক্তিযোদ্ধা সার্জেন্ট (অব.) মজিবর রহমানের পুত্র, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল ‘উন্নয়ন ও জননিরাপত্তা’ এই দু’টি এজেন্ডাকে সামনে রেখে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন। নিজ জন্মভূমি গোপালপুর থেকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। গত কয়েক দিনে তিনি ছলিমগঞ্জ, বরিকান্দি, নাটঘর, বিদ্যাকুট, বড়াইল, কৃষ্ণনগর, বীরগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভিন্ন পথসভায় যোগ দেন। তার নির্বাচনী প্রচারণা অংশ হিসেবে আগামী ২৮ তারিখ রতনপুর ও পৌরসভায় নির্বাচনী পথসভায় অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে। এলাকাবাসী তাদের প্রিয় অভিভাবককে নৌকা প্রতীক দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
সোহেল নামক এক সিএনজিচালক আবেগে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বাদল ভাইয়ের এই দিনটি দেখার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। আল্লাহ যেন সহায় হন। বড়াইল বাজারে এক জনসভায় ফয়জুর রহমান বাদল প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের কর্মীদেরকে ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিত করার তাগিদ দেন। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের বিভিন্ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সদস্যদের সংখ্যার বিবরণ দিয়ে ঘরে বসে না থেকে প্রত্যেক ভোটারদের দ্বারস্থ হওয়ার আহ্বান জানান। কোনো অনিয়ম করলে দলীয় কর্মী হলেও তিনি তাকে আইনে সোপর্দ করার কড়া হুঁশিয়ারি ব্যক্ত করেন। তার আমলে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিবরণ দিয়ে আগামী দিনে এই উন্নয়ন অব্যাহত রাখার কথা বলে সমাজের সকল শ্রেণির লোকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ঘোষণা দেন।
তিনি নির্বাচিত হলে উপজেলা প্রশাসন ও থানায় কোনো নেতা-কর্মীর কোনো তদবিরের সুযোগ থাকবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আবারো জনগণের সেবক হতে আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনী কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের ভোট দিতে অনুরোধ করেন। তিনি প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলারও আহ্বান জানান। কৃষ্ণনগর থানার কান্দি এক পথ সভায় তিনি উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তবে তিনি যুবকদের ইঙ্গিত করে বলেন, নির্বাচিত হলে কেউ দাঙ্গা-হাঙ্গামা করলে সে যে দলেরই হোক তাকে ছাড় দেয়া হবে না। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনসহ স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
এর আগে তিনি খাড়ঘর শহীদ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদে তিনি নবীনগর থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি তার আমলে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন মঞ্জুর করেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলো অসংখ্য ব্রিজ, কালভার্টসহ নবীনগর-আশুগঞ্জ সড়ক, নবীনগর রাধিকা সড়ক, এবং মহেশপুর রোড। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের মতিঝিল এলাকার সাবেক কাউন্সিলর ও বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক স্বতন্ত্র প্রার্থী এ. কে. এম মমিনুল হক সাঈদ, ফুলের মালা নিয়ে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ জাফরুল কুদ্দুছ, একতারা প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির জামাল সরকার, মিনার প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের মো. মেহেদি হাসান, লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টি মো. মোবারক হোসেন, সোনালী আঁশ প্রতীক নিয়ে তৃণমূল বিএনপি’র হাবিবুর রহমান।
ইতিমধ্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা জাসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট আক্তার হোসেন সাঈদ নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে এম মমিনুল হক আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে নৌকার প্রচারণায় নামেন। বর্তমানে এই আসনে সংসদ সদস্য রয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত বিশিষ্ট শিল্পপতি মোহাম্মদ এবাদুল করিম। একটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই জনপদে মোট ৪ লাখ ৩২ হাজার ৩০৭ ভোটারের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ২৪ হাজার ৫৭৬ জন এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ৭ হাজার ৭২৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ২ জন বলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আজগর আলী জানান।
