জবির ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চল্লিশ কর্মচারীর বাস

জবি প্রতিনিধি |

পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের ৩৫ নং প্যারিদাস রোডের অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণী ভবন। ভবনের ফটকে সাইনবোর্ডে লেখা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের আবাস। চল্লিশ কর্মচারী বসবাস করেন এই ভবনে। কেউ কেউ থাকেন পরিবার নিয়েও।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনের ১৯ টি রুমে বাস করেন চল্লিশ কর্মচারী। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আগেই বিদ্যুৎ ও গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এই ভবনের। সিলিন্ডার গ্যাস ও সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করে থাকছেন তারা। ভবনের সব দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে, কিছু কিছু জায়গায় ভেঙে পড়েছে ছাদ। জোড়াতালি দিয়ে থাকছেন কর্মচারীরা। 

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে অন্যান্যদের মতই বসবাস করছেন রানা আহমেদ। তিনি বলেন, আমার বেতন অল্প। বাইরে থাকতে গেলে অনেক খরচ। সেজন্য ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও এখানে বাস করছি। এতদিনেও এখানে বিদ্যুতের ব্যবস্থা হয়নি। গোসলখানা ও টয়লেটের অবস্থাও খারাপ। কোনো রকমে মাথা গোজার একটু জায়গা আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনটি ছাড়তে বলেছে। কিন্তু এ অল্প বেতনে বাইরে থাকা কঠিন।

এ ভবনেই পরিবার নিয়ে বাস করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক কর্মচারী আবুল কালাম। তিনি বলেন, যে বেতন পাই তাতে বাসা ভাড়া নিয়ে পরিবারসহ থাকা সম্ভব না। তাই এখানে থাকছি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থাকার অনুমতি নেই। কিন্ত আমরা কোনোমতে নিজেদের থাকার মত টিনশেড ঘর বানিয়ে থাকছি।

ভবনটি বেশ পুরনো এবং ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। তাই ভবনটি খালি করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে একাধিকবার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন জগন্নাথ কর্মচারীরা। কর্মচারীদের দাবি তাদের স্বল্প আয় দিয়ে বাসা ভাড়া করে থাকা সম্ভব না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন তারা।

রাজু আহমেদ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক কর্মচারী বলেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। তেমন গোছালোও নয়। পরিস্থিতির শিকার তাই এখানে থাকছি। পুরাতন ভবন ভেঙে টিনশেড করে দিলে অন্তত নতুন ক্যাম্পাসে কর্মচারী আবাস তৈরি হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা এখানে নিরাপদে থাকতে পারবো।

জানা যায়, তৎকালিন জগন্নাথ কলেজের ছাত্রদের আবাসিক হল হিসেবে ব্যবহৃত হতো এ ভবনটি। পরবর্তীতে ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে এরশাদ সরকার ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে এলাকার প্রভাবশালীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ছাত্ররা। পরে হল ত্যাগ করে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন খালি পড়ে থাকে ভবনটি।

পরবর্তীতে এ ভবনটিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা বসবাস করতে শুরু করেন। বেশ পুরনো ভবনটিকে আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করে রাজউক। তাই ঝুঁকি এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনটি ছেড়ে দিতে একাধিকরার নির্দেশ দেয় কর্মচারীদের। তবে প্রশাসনের নির্দেশ না মেনে সেখানেই বসবাস করছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সমস্যা রয়েছে। বাণী ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ওখানে বসবাসরত কর্মচারীদের সরে যেতে বলা হয়েছিলো। কেউ ঝুঁকিতে থাক এটি আমরা চাই না। কেরানীগঞ্জে ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ চলছে। এ ক্যাম্পাস নির্মাণ হলেই স্থায়ী সমাধান হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ফল পরিবর্তনের আশ্বাসে আর্থিক প্রতারণা, সতর্ক করলো কারিগরি বোর্ড - dainik shiksha ফল পরিবর্তনের আশ্বাসে আর্থিক প্রতারণা, সতর্ক করলো কারিগরি বোর্ড সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টার - dainik shiksha সচিবদের একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টার অধ্যাপক পদকে তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করার দাবি মর্যাদা রক্ষা কমিটির - dainik shiksha অধ্যাপক পদকে তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করার দাবি মর্যাদা রক্ষা কমিটির নবীন সরকারি কর্মকর্তাদের সৎ থাকার আহ্বান জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha নবীন সরকারি কর্মকর্তাদের সৎ থাকার আহ্বান জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি - dainik shiksha প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা পাচ্ছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব - dainik shiksha জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা পাচ্ছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব সংযুক্ত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের কপাল খুলছে - dainik shiksha সংযুক্ত ইবতেদায়ি শিক্ষকদের কপাল খুলছে মধ্যরাতে ববি-বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘ*র্ষ, আহত ২৫ - dainik shiksha মধ্যরাতে ববি-বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘ*র্ষ, আহত ২৫ এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড - dainik shiksha এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0059449672698975