জবি শিক্ষার্থীকে মার*ধর-ছিনতা*ইয়ের অভিযোগ দুই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে

জবি প্রতিনিধি |

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রসায়ন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের পর টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের দুই নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে মুখ খুললে ভুক্তভোগীকে শিবির ট্যাগ দিয়ে জেলে পুরে দেয়ার হুমকি দেন অভিযুক্তরা। 

অভিযুক্তরা হলেন, দর্শন বিভাগের ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মেহেদী হাসান ও অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের ইকবাল মাহমুদ রানা। রানা অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তারা দুজনই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইনের অনুসারী।

মঙ্গলবার এ বিষয়ে জাবি প্রক্টর বরাবর অভিযোগ জমা দিয়েছেন রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইব্রাহিম জনি।

 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে ১৮ তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন উপলক্ষে রসায়ন বিভাগের সাজসজ্জার কাজ শেষ করে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় ইকবাল মাহমুদ রানা এবং মোহাম্মদ মেহেদি ইব্রাহিমের পথ রোধ করে এবং বিভিন্ন জিজ্ঞাসাবাদ করেন। নানা ধরনের প্রশ্নের পর তারা ইব্রহিমের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে চেক করে। মোবাইল ফোনে কিছু না পেয়ে মেরে ফেলার ও জেলে পাঠানোর হুমকি দেয়। পরবর্তীতে তারা ওই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে নিয়ে মারধর করে এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। পরবর্তীতে মারধর করা হয় ইব্রাহিমকে। তিনি বাবা-মা ও টিউশনগুলোর গার্জিয়ানদের বাসায় ফোন করে ১৩ হাজার টাকা নেন বিকাশে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইব্রাহিম জনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, চড়-থাপ্পর দিয়ে জোরপূর্বক আমার বিকাশ ও নগদের পাসওয়ার্ড নেয়। এরপর মেহেদি আমাকে ইকবাল মাহমুদ রানার সঙ্গে বসিয়ে রেখে আমার মোবাইল নিয়ে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে নেয় এবং বিভিন্ন নাম্বারে রিচার্জ করে। তারা বললেন আমাকে মেরে শিবির ট্যাগ দিয়ে দেবে। এমনকি আমি যেনো মুখ না খুলি এই ভয় দেখিয়ে শিবির করি বলে জোর করে ভিডিও করে। তারা বলে আমি কোন বিচার পাবো না, প্রক্টরও নাকি বিচার করবে না। 

জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইকবাল মাহমুদ রানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, একটি ফেসবুক পোস্ট শেয়ারের বিষয়ে জানতে চাইলে সে ভুল স্বীকার করে পোস্ট মুছে দিয়েছে। কিন্তু তাকে মারধর ও টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

অভিযুক্ত মেহেদী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ওই ছেলে নিজে স্বীকার করেছে, সে শিবির করে। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে। তাকে মারধর ও টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তার সঙ্গে ভালো একটা সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিলো এজন্য ফোনে ফ্লেক্সিলোড দিয়েছিলো। 

জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী হলে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দেবে। কারো ব্যক্তিগত কোনো অপরাধের দায় ছাত্রলীগ নেবে না। 

রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবুল কালাম মো. লুৎফর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এমন ঘটনা কখনই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় নিয়ে আসুক। দোষীরা যেকোনো দলেরই হোক তারা পার পেতে পারে না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দূর্নীতি বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছেন। আমরাও সেটাই করবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হবে। দোষীদের ছাড় দেয়া হবে না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এইচএসসিতে বরিশাল বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২৯ - dainik shiksha এইচএসসিতে বরিশাল বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২৯ পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা - dainik shiksha পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা শিক্ষায় কী হলো তিন মাসে - dainik shiksha শিক্ষায় কী হলো তিন মাসে মাদরাসায় চলে যায় প্রাথমিকের ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী - dainik shiksha মাদরাসায় চলে যায় প্রাথমিকের ২৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক অবশেষে কপাল খুললো পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে বাদপড়াদের - dainik shiksha অবশেষে কপাল খুললো পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে বাদপড়াদের শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ১৫তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ১৫তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! - dainik shiksha দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! - dainik shiksha ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027821063995361